মরু অঞ্চলে শুষ্কতার ক্ষয়চক্রের বিষয়টির প্রথম প্রবক্তা হলেন উইলিয়াম মরিস ডেভিস। ডেভিস এর মতে ভূ আলোড়নে সর্বপ্রথম কতগুলি পর্বত বেষ্টিত অববাহিকার সৃষ্টি হয় যাতে কেন্দ্রমুখী জলনির্গম প্রণালী গড়ে ওঠে। ক্রমে ক্রমে অববাহিকার পার্শ্ববর্তী পর্বত গুলি ধীরে ধীরে অববাহিকার ও জলের কাজে ভয় পেয়ে পশ্চাৎ অপসারণ করে। এবং অববাহিকার মধ্যে স্থানীয় কতগুলি পৃথক পৃথক নিম্ন দিকে ক্ষয় করার শেষ সীমা গড়ে ওঠে। যৌবন অবস্থায় বিভিন্ন প্রাপ্ত পদার্থ অববাহিকায় সঞ্চিত হতে থাকায়, অববাহিকা ক্রমশ উঁচু হয়ে পরে এবং পার্শ্ববর্তী পর্বত গুলি ক্রমশ নিচু হতে থাকে। পরবর্তীকালে নদীগুলির মস্তকের দিকে ক্ষয়ের ফলে পর্বত গুলি পরস্পর থেকে ব্যবচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং পার্শ্ববর্তী অববাহিকা কে অববাহিকাকে গ্রাস করে। এইভাবে বিভিন্ন অববাহিকার মধ্যে নদীগুলি পরস্পরকে গ্রাস করে কিছুটা একত্রিত হয়। এখান থেকেই ভূমিরূপের পৌঢ় অবস্থা প্রাপ্ত হয়। পরবর্তীকালে নদীগুলি একত্রিত হওয়ার ফলে অববাহিকার মধ্যে পৃথক পৃথক নিম্ন দিকে ক্ষয় করার পরিবর্তে একটি মাত্র স্থানীয় ক্ষয় করার সীমা দ্বারা অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রিত হয়। এর পরবর্তীকালে পর্বত গুলি ক্ষয় পেয়ে অবশিষ্ট পাহাড় রূপে দাঁড়িয়ে থাকে। বার্ধক্য অবস্থায় অঞ্চলটিতে বায়ুর কাজ প্রাধান্য পায়। ফলে বায়ু দ্বারা অপসৃত পদার্থ সমূহ বিস্তৃততম অঞ্চল জুড়ে প্রসারিত হয়ে পড়ে।
ডেভিস তার শুষ্কতার ক্ষয়চক্রের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমের মরু অঞ্চলের ন্যয় পর্বত বেষ্টিত অববাহিকায় প্রযোজ্য হলেও পৃথিবীর যাবতীয় মরু অঞ্চলে পর্বত বেষ্টিত অববাহিকায় প্রযোজ্য নয়। তাই ডেভিসের এই ক্ষয়চক্রের ধারণা সর্বতোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
পরবর্তীকালে ডেভিসের অন্যতম ছাত্র এল সি কিং পেডিমেন্ট এর ক্ষয়চক্র নামে অপর একটি স্বতন্ত্র মতবাদ প্রকাশ করেন এবং এটি ডেভিস প্রবর্তিত অপেক্ষা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। পরবর্তীকালে ডেভিস নিজেও এল সি কিং এর মতবাদ সমর্থন করেছেন।
No comments:
Post a Comment