River system of west Bengal Class 10 geography || পশ্চিমবঙ্গের নদ-নদীর শ্রেণীবিভাগ দশম শ্রেণী || WBBSE

পশ্চিমবঙ্গ কে নদীমাতৃক রাজ্য বলে কেন ? 

ভারতের অঙ্গরাজ্য গুলির মধ্যে পূর্বাঞ্চলের অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিনে বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তরে হিমালয় পর্যন্ত প্রসারিত। ভারতের আর কোনো অঙ্গরাজ্যের এইরূপ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অবস্থান লক্ষ্য করা যায় না। অবস্থান গত, জলবায়ুগত বৈচিত্র এবং ভূমিরূপের বিভিন্নতার কারনে এই রাজ্যের উপর দিয়ে অসংখ্য নদ-নদী জালের মত চতুষ্পার্শ্বে বিস্তৃত রয়েছে। এই অসংখ্য নদ নদী শুধুমাত্র নৌ পরিবহনই নয়, এই রাজ্যের আর্থ সামাজিক পরিকাঠামো অর্থাৎ কৃষি, শিল্প, ব্যবসা বাণিজ্য, সংস্কৃতি প্রতিটি ক্ষেত্রে নদী গুলির প্রভাব সুস্পষ্ট। তাছাড়া রাজ্যবাসীর চারিত্রিক কাঠামোর উপর নদী গুলির সুদুর প্রসারি প্রভাব রয়েছে, তাই আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গকে স্বাভাবিক ভাবেই নদীমাতৃক রাজ্য বলে। 



পশ্চিমবঙ্গের নদ-নদীর শ্রেণীবিভাগ কর এবং বৈশিষ্ট্য সহ এদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধর । 

বৈশিষ্ট্য ও প্রকৃতি ভেদে বিভিন্ন বিজ্ঞানীগণ পশ্চিমবঙ্গের নদ-নদীকে প্রধান তিনটি ভাগে বিভক্ত করেছেন। এই বিভাগ গুলি হল যথাক্রমে ১) বরফ গলা জলে পুষ্ট নদ-নদী বা উত্তরবঙ্গের নদ নদী সমূহ ২) বর্ষন পুষ্ট বা বৃষ্টির জলে সৃষ্ট নদ-নদী বা দক্ষিণবঙ্গের নদ-নদী সমূহ এবং ৩) জোয়ারের জলে প্লাবিত নদ-নদী বা সুন্দরবন অঞ্চলের নদ নদী সমূহ। 



A) বরফ গলা জলে পুষ্ট নদ-নদী বা উত্তরবঙ্গের নদ নদী 

উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিনে গঙ্গা নদী পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সীমা নির্ধারিত। উত্তরবঙ্গ উত্তরে অবস্থিত হিমালয় পর্বতের হিমবাহ থেকে যে সকল নদী গুলি সৃষ্টি হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গঙ্গা, তিস্তা, মহানন্দা, বালাসন, জলঢাকা, তোর্সা, কালজানি, রায়ডাক, সংকোশ প্রভৃতি। 

গঙ্গা নদী 

পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ নদী হল গঙ্গা। কুমায়ুন হিমালয় উৎপত্তি লাভ করে রাজমহল পাহাড়ের নিকট গঙ্গা নদী পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে এবং ধুলিয়ান এর নিকট দুই ভাগে ভাগ হয়ে প্রধান শাখাটি পদ্মা নাম নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, অপর শাখাটি ভাগীরথী- হুগলি নামে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। এই নদীর তীরে কলকাতা নগরীর পত্তন হয়। পরবর্তীকালে এই নদীর তীরে হুগলি শিল্পাঞ্চল বিকাশ লাভ করে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের কৃষি, জলসেচ, ব্যবসা বাণিজ্য, নৌপরিবহন, সংস্কৃতি ও পর্যটনে এই নদীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। 

তিস্তা নদী 

উত্তরবঙ্গের প্রধান নদী তথা ত্রাসের নদী হল তিস্তা। এই নদীটি সিকিমের জেমু হিমবাহ থেকে উৎপত্তি লাভ করে দার্জিলিং পাহাড়কে দুই ভাগে বিভক্ত করে দক্ষিণ পূর্বে প্রবাহিত হয়ে হলদিবাড়ির নিকট বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।তিস্তা ও তার উপনদী বাহিত পলি সঞ্চয়ে ডুয়ার্স ও বরেন্দ্রভূমির সৃষ্টি হয়েছে। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে, কৃষিতে, জলসেচে তিস্তা নদীর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। জলপাইগুড়ি, হলদিবাড়ি প্রভৃতি জনপদ এই নদীর তীরে গড়ে উঠেছে। 

বরফ গলা জলে পুষ্ট নদ-নদী বা উত্তরবঙ্গের নদ নদী


উত্তরবঙ্গের নদী গুলির বৈশিষ্ট্য 

১) নদীগুলি হিমবাহের বরফ গলা জলে পুষ্ট বলে এরা নিত্যবহ। 

২) নদীগুলি পার্বত্য হইতে উৎপত্তি লাভ করে খাড়া সমভূমি তে পতিত হওয়ায় নদীর প্রসস্থ এবং অগভীর, তাই বর্ষার অতিরিক্ত জলে নদীগুলি প্লাবিত হয়ে প্রতিবছর বন্যা সৃষ্টি হয়। 

৩) সমভূমি অঞ্চলে নদীগুলি প্রতিনিয়ত নিজেদের গতিপথ পরিবর্তন করে। 

৪) নদীগুলি খরস্রোতা বলে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ। 

৫) পার্বত্য প্রবাহে নদীগুলি সুগভীর গিরিখাত গঠন করে নেমে এসেছে। 

৬) নদীগুলির পার্বত্য প্রবাহে একাধিক জলপ্রপাত দেখা যায়। 



B) বর্ষণ পুষ্ট নদনদী বা দক্ষিণবঙ্গের নদ-নদী 

দক্ষিণবঙ্গের নদ-নদী বর্ষার জলে পুষ্ট এবং এদের বেশির ভাগের উৎপত্তি স্থল হল পশ্চিমের ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চল। ভূমি ভাগের ঢাল অনুসারে এই নদীগুলি পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয় ভাগীরথী- হুগলি নদীতে এসে মিলিত হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বর্ষন পুষ্ট বা বৃষ্টির জলে সৃষ্ট নদী গুলির মধ্যে দামোদর, কংসাবতী বা কাসাই, শিলাবতী বা শিলাই, অজয়, রূপনারায়ন, ময়ূরাক্ষী, সুবর্ণরেখা, কেলেঘাই, হলদিনদী উল্লেখযোগ্য। 

দামোদর 

পশ্চিমবঙ্গের বৃষ্টির জলে পুষ্ট নদী গুলির মধ্যে দামোদর সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ নদী। ফিবছর বন্যার কারনে একসময় দামোদর নদকে বাংলার দুঃখ বলা হত। পরবর্তীকালে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন গঠিত হওয়ার পর নদী অববাহিকায় বাধ দিয়ে কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করে বন্যা রোধ করা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি দামোদর নদের অববাহিকা অঞ্চলে গন্ডোয়ানা যুগের কয়লা সঞ্চয় থাকার ফলে এর উপর ভিত্তি করে দুর্গাপুর আসানসোল বার্নপুর কুলটি প্রভৃতি শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। 

বর্ষণ পুষ্ট নদনদী বা দক্ষিণবঙ্গের নদ-নদী


দক্ষিণবঙ্গের নদী গুলির বৈশিষ্ট্য 

১) নদীগুলি হিমবাহ পুষ্ট নয়। বর্ষনপুষ্ট হওয়ায় নদী গুলিতে বর্ষাকালে জল থাকলেও গ্রীষ্মকালে এবং শীত ঋতুতে নদী গুলি শুকিয়ে যায়। 

২) উৎস অঞ্চল মালভূমির অন্তর্গত তাই উৎস অঞ্চলের নদীগুলি যথেষ্ট খরস্রোতা । 

৩) উত্তরবঙ্গের নদী গুলির তুলনায় দক্ষিণবঙ্গের নদী গুলির দৈর্ঘ্য অনেক কম। 

৪) বঙ্গোপ গরের নিকটবর্তী হওয়ায় নদী গুলির মোহনা অঞ্চলে জোয়ার ভাটা লক্ষ্য করা যায়। 

৫) অনিত্যবহ প্রকৃতির বলে নৌপরিবহনে এই নদীগুলি বিশেষ উপযোগী নয়। 

৬) দক্ষিণবঙ্গের নদী গুলির প্রবাহ পথ ও মোহনা অঞ্চল গঙ্গার ব-দ্বীপ সমভূমির অন্তর্গত বলে, দক্ষিণবঙ্গের নদী গুলির গতিপথ অত্যন্ত আঁকাবাঁকা এবং দীর্ঘ দিনের পলি সঞ্চয়ে নদীখাত গুলি ক্রমশ ভরাট হয়ে এসেছে। 

C) জোয়ার ভাটা জলে প্লাবিত সুন্দরবন অঞ্চলের নদ-নদী 

জোয়ারের জলে প্লাবিত নদী বলতে সুন্দরবনের অন্তর্গত নদী এবং সামুদ্রিক খাড়ি গুলিকে বোঝায়। এরা মূলত ভাগীরথী ও হুগলি নদীর শাখানদী এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এরা একে অপরের সাথে যুক্ত। এই নদী গুলির মধ্যে মাতলা, হাড়িয়াভাঙ্গা, পিয়ালী, ঠাকুরান, সপ্তমুখী, গোসাবা, রায়মঙ্গল, ইচ্ছামতি প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

জোয়ার ভাটা জলে প্লাবিত সুন্দরবন অঞ্চলের নদ-নদী


সুন্দরবন অঞ্চলের নদী গুলির বৈশিষ্ট্য 

১) সামুদ্রিক জোয়ারে নদী গুলি প্লাবিত হওয়ায় জোয়ারের সময় নদী গুলিতে নৌকা চলাচল করলেও ভাটার সময় নদীগুলি নৌপরিবহনে অযোগ্য। 

২) সামুদ্রিক জোয়ারে প্লাবিত হওয়ায় নদীগুলির জল লবণাক্ত হয়ে পড়েছে। 

৩) অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নদীগুলি সামুদ্রিক খাড়িতে পর্যবসিত হয়েছে। 

৪) নদীখাত গুলি দীর্ঘদিনের পলি সঞ্চায়ে ভরাট হয়ে পড়েছে তাই নদীগুলি অত্যন্ত অগভীর এবং অনেক সময় নদীগুলি তাদের মূল প্রবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। 

৫) সামুদ্রিক জোয়ারে প্লাবিত হওয়ার ফলে মৎস্য শিকারে নদীগুলি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, এমনকি এই নদীগুলি স্থানীয় জীবনযাত্রা প্রণালীকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছে। 


Share:

MCQ Mock Test of Composed Upon Westminster Bridge || WBCHSE

Composed Upon Westminster Bridge

Interactive Multiple Choice Question Mock Test on Composed Upon Westminster Bridge  by William Wordsworth is given here. By trying this, hope you can get a vivid picture about your level of study for Higher Secondary Exam.


Composed Upon Westminster Bridge (Poem Analysis)


Share:

Map Pointing: Power Resource of West Bengal Class 9 Geography ||পশ্চিমবঙ্গের শক্তি সম্পদ মানচিত্র অনুশীলন নবম শ্রেণী || WBBSE

পশ্চিমবঙ্গের শক্তি সম্পদ : মানচিত্র অনুশীলন

ম্যাপ পয়েন্টিং ভূগোল বিষয়কে ভালোভাবে হাতে-কলমে শেখার একটি উল্লেখযোগ্য হাতিয়ার। এর দ্বারা আমরা ভূগোলের কোন স্থানের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারি। পাশাপাশি ম্যাপ পয়েন্টিং এর অনুশীলনের মাধ্যমে খুব সহজে নম্বর তোলা যায়। আজকে আমরা আলোচনা করব পশ্চিমবঙ্গের শক্তি সম্পদের ম্যাপ পয়েন্টিং সম্পর্কে। প্রসঙ্গত বলে রাখি পরীক্ষার সময় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জলবিদ্যুৎ ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলি থেকে শুধু একটি মাত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রদত্ত মানচিত্রে সঠিক সূচক ধারা চিহ্নিত করতে হবে।  

পশ্চিমবঙ্গের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

পশ্চিমবঙ্গের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ফারাক্কা, বক্রেশ্বর, সাগরদিঘী, দূর্গাপুর ও দূর্গাপুর স্টিলপ্লান্ট, সাঁওতালডিহী, মেঝিয়া, ব্যান্ডেল, টিটাগড় এবং কোলাঘাট। এদের মধ্যে সবথেকে বেশী পরীক্ষায় আসে ফারাক্কা । তবে এর পাশাপাশি  তোমাদের দূর্গাপুর, ব্যান্ডেল ও কোলাঘাট অবশ্যই অনুশীলন করতে হবে। সাঁওতাল ডিহী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র টির অবস্থান এক নজরে দেখে রেখো।  

পশ্চিমবঙ্গের  জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র

এবার আসি পশ্চিমবঙ্গের  জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলি সম্পর্কে । পশ্চিমবঙ্গের  জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল তিস্তা, জলঢাকা, নেওরা, কুমাই ,মংপু ইত্যাদি। এদের মধ্যে জলঢাকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরীক্ষায় ঘুরে ফিরে আসে। পাশাপাশি তিস্তা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রসঙ্গত বলে রাখি সিদ্রাপং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পশ্চিমবঙ্গ তথা  ভারতের প্রথম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি পরীক্ষায় না আসলেও জেনে রাখা উচিত। পরবর্তীতে বিভিন্ন চাকুরীর পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান হিসাবে আসতে পারে। 

আশা করি ওপরের মানচিত্রে দেখানো পশ্চিমবঙ্গের নদীগুলি অনুশীলনের মাধ্যমে তোমরা নিশ্চয়ই পরীক্ষায় ভালো নাম্বার তুলতে পারবে। মানচিত্র অনুশীলনের ক্ষেত্রে যদি কোন বোঝার অসুবিধা সৃষ্টি হয়, তোমরা নিঃসংকোচে কমেন্ট বক্সে সমস্যার কথা জানিও।


Share:

Atlantic Ocean Current Class 11 Geography || আটলান্টিক মহাসাগরীয় সমুদ্রস্রোত একাদশ শ্রেণী || WBCHSE

আটলান্টিক মহাসাগরীয় সমুদ্রস্রোত

পশ্চিম উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূল,  পূর্বে ইউরোপ আফ্রিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূল,  উত্তরে গ্রিনল্যান্ড এবং দক্ষিণে কুমেরু সাগর পরিবেষ্টিত ইংরেজি “S” অক্ষর বিশিষ্ট পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগর আটলান্টিক অবস্থিত ।  এই মহাসাগরকে প্রায় মাঝ বরাবর নিরক্ষরেখা দুই ভাগে বিভক্ত করেছে যথা উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর এবং দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর।  পৃথিবীর আবর্তন,  নিয়ত বায়ু প্রবাহ,  বাষ্পীভবনের হ্রাস বৃদ্ধি,  লবণতার তারতম্য ইত্যাদি কারণে  আটলান্টিক মহাসাগরে  অসংখ্য সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়েছে।  অবস্থান অনুসারে এইসকল স্রোত গুলির পরিচয় নিচে দেওয়া হল -


  1. উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের সমুদ্র স্রোত সমূহ


উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝ বরাবর প্রসারিত নিরক্ষরেখার  উত্তরে পৃথিবীর আবর্তন গতি ও উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর প্রভাবে ১) উত্তর আটলান্টিক উষ্ণ নিরক্ষীয় স্রোতের উৎপত্তি লাভ করে পশ্চিমে অগ্রসর হয় এবং পশ্চিম ক্যারিবিয়ান সাগরে দক্ষিণ নিরক্ষীয় একটি শাখায় মিলিত হয়ে ২)  ক্যারিবিয়ান স্রোত নামে মেক্সিকোর উপকূল বরাবর উষ্ণ স্রোত রূপে অগ্রসর হয়। ৩) কুমেরু সাগর থেকে শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের সাথে মিলিত হয়ে  হিমপ্রাচীর গড়ে তোলার পর পশ্চিমা বায়ু তাড়িত হয়ে ৪) উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত নামে পূর্ব দিকে ধাবিত হয়। উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত থেকে একটি শাখা ৫) শীতল ক্যারিবিয়ান স্রোত নামে উৎস অঞ্চলের ফিরে আসে এবং ৬) এর একটি শাখা গিনি স্রোত নামে দক্ষিনে অগ্রসর হয় এবং অপর একটি শাখা ৭) উষ্ণ আটলান্টিক স্রোত নামে ব্রিটেনের উত্তর উপকূল দিয়ে সুমেরু ও কুমেরু সাগরে প্রবেশ করে এবং এর একটি শাখা ৮  ) গ্রীনল্যান্ড স্রোত নামে আইসল্যান্ড কে প্রদক্ষিণ করে পুনরায় দক্ষিনে এগিয়ে আসে।  উপসাগরীয় স্রোতের অপর একটি শাখা উষ্ণ স্রোত রূপে গ্রীনল্যান্ডের দক্ষিণ প্রান্তে ঘুরে সুমেরু সাগর থেকে আসা শীতল  ল্যাব্রাডর স্রোতের বিপরীতে গমন করে যাকে ৯)  পশ্চিম গ্রীনল্যান্ড স্রোত বলে। 


উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের প্রধান প্রধান এই স্রোত গুলি উপকূল বরাবর চক্রাকারে আবর্তিত হাওয়ায় উত্তর আটলান্টিকের মধ্যভাগের  জল প্রায় আলোড়নহীন অবস্থায় বিভিন্ন প্রকার শৈবাল ও আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।  তাই উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্য ভাগ  শৈবাল সাগর নামে পরিচিত। 


  1. দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের স্রোত সমূহ


নিরক্ষরেখার দক্ষিণে সৃষ্ট উষ্ণ দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত আয়ন বায়ু তাড়িত হয়ে পশ্চিমা ব্রাজিল উপকূলের  দিকে প্রবাহিত হয় যার একটি শাখা ক্যারিবিয়ান সাগরে উত্তর আটলান্টিক স্রোত এর সাথে মিলিত হয় এবং অপর শাখাটি ১১) উষ্ণ ব্রাজিল স্রোত নামে ব্রাজিলের পূর্ব উপকূল বরাবর দক্ষিণে প্রবাহিত হয়।  কুমেরু সাগর থেকে আগত শীতল  কুমেরু স্রোতের একটি শাখা ১২) ফকল্যান্ড দ্বীপের পাশ দিয়ে শীতল ফকল্যান্ড স্রোত নামে উত্তরে এগিয়ে আসে এবং উষ্ণ ব্রাজিল স্রোতের  সাথে মিলিত হয় পশ্চিমা বায়ুর প্রবাহে শীতল স্রোত রূপে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়। ১৩) এই শীতল স্রোত ও শীতল কুমেরু সাগরের  কুমেরু স্রোতের  একটি শাখা আফ্রিকার দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলবরাবর প্রবাহিত হয়ে ১৪)  শীতল বেঙ্গুয়েলা  স্রোত নামে উত্তর দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত এর সাথে মিলিত হয় এবং এর একটি শাখা সরাসরি উত্তরে উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত থেকে নেমে আসা গিনি স্রোত আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে পরস্পর মিলিত হয়। প্রসঙ্গত কুমেরু স্রোতের একটি শাখা সরাসরি পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয় ভারত মহাসাগরে প্রবেশ করে।


দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের গোধূলি উপকূল বরাবর চক্রাকারে আবর্তিত হয়, তাই দক্ষিণ আটলান্টিক  মহাসাগরের তুলনামূলকভাবে আলোর অবস্থায় থাকে । তবে দক্ষিণ গোলার্ধে জলভাগের পরিমান বেশি থাকায় বিনা বাধায় বয়ে চলা প্রবল বায়ুপ্রবাহে সমুদ্র তরঙ্গের প্রভাব অনেক বেশি থাকে,  ফলে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের মত এখানে আগাছা জন্মায় তত বেশি প্রকট নয়। 


উত্তর ও দক্ষিণ উষ্ণ আটলান্টিক স্রোত দুটি পশ্চিমে অগ্রসর হয় এবং এর পাশাপাশি দুটি স্রোত পশ্চিম থেকে পূর্বে অগ্রসর হয় যা উত্তর ও দক্ষিণ নিরক্ষীয়  প্রতিস্রোত নামে পরিচিত।
Share:

Map Pointing Physiography of West Bengal Class 10 || পশ্চিমবঙ্গের ভূপ্রকৃতি ম্যাপ পয়েন্টিং দশম শ্রেণী || WBBSE

পশ্চিমবঙ্গের ভূপ্রকৃতি 

ম্যাপ পয়েন্টিং ভূগোল বিষয়কে ভালোভাবে হাতে-কলমে শেখার একটি উল্লেখযোগ্য হাতিয়ার। এর দ্বারা আমরা ভূগোলের কোন স্থানের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারি। পাশাপাশি ম্যাপ পয়েন্টিং এর অনুশীলনের মাধ্যমে খুব সহজে নম্বর তোলা যায়। আজকে আমরা আলোচনা করব পশ্চিমবঙ্গের ভূ- প্রাকৃতিক অঞ্চলের ম্যাপ পয়েন্টিং সম্পর্কে। প্রসঙ্গত বলে রাখি পরীক্ষার সময় পশ্চিমবঙ্গের ভূ- প্রাকৃতিক অঞ্চল গুলি থেকে থেকে শুধু একটি মাত্র অঞ্চল বা শৃঙ্গ প্রদত্ত মানচিত্রে সঠিক সূচক ধারা চিহ্নিত করতে হবে।


পশ্চিমবঙ্গের ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চলের মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল সন্দরবন ও পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চল। এই  মালভূমি ও সুন্দরবন ফিবছর পরীক্ষায় এসে থাকে । পাশাপাশি উপকূলীয় সমভূমি এবং তরাই ও ড্যার্স অঞ্চল আমাদের অনুশীলন করতে হবে। আরেকটি  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিরূপ হল দার্জিলিং এর পার্বত্য ভূমি।  


উত্তরের সমভূমি পরীক্ষায় না এলেও তোমাদের তাল, বরেন্দ্রভূমি এবং দিয়ারা অঞ্চলের অবস্থান জানতে হবে। তবে গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চল বা গাঙ্গেয় সমভূমি ( পশ্চিমবঙ্গের অংশ ) পরীক্ষায় মাঝে মধ্যে এসে থাকে। 


পশ্চিম বঙ্গের যে সকল পাহাড় পর্বত রয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গ গুলি হল ফালুট, সান্দাকফু, বক্সাদুয়ার, গোর্গাবুরু এছাড়া বিহারীনাথ ও শুশুনিয়া পাহাড়। 


তবে, পশ্চিম বঙ্গের উচ্চতম শৃঙ্গ সান্দাকফু এবং পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের উচ্চতম শৃঙ্গ গোর্গাবুরু পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

আশা করি ওপরের মানচিত্রে দেখানো পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমবঙ্গের ভূ- প্রাকৃতিক অঞ্চলের অনুশীলনের মাধ্যমে তোমরা নিশ্চয়ই পরীক্ষায় ভালো নাম্বার তুলতে পারবে। মানচিত্র অনুশীলনের ক্ষেত্রে যদি কোন বোঝার অসুবিধা সৃষ্টি হয়, তোমরা নিঃসংকোচে কমেন্ট বক্সে সমস্যার কথা জানিও।


Share:

Map Pointing River System of West Bengal Class 9 Geography ||পশ্চিমবঙ্গের নদনদী মানচিত্র অনুশীলন নবম শ্রেণী || WBBSE

পশ্চিমবঙ্গের নদনদী মানচিত্র অনুশীলন

ম্যাপ পয়েন্টিং ভূগোল বিষয়কে ভালোভাবে হাতে-কলমে শেখার একটি উল্লেখযোগ্য হাতিয়ার।  এর দ্বারা আমরা ভূগোলের  কোন স্থানের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারি। পাশাপাশি ম্যাপ পয়েন্টিং এর  অনুশীলনের মাধ্যমে খুব সহজে নম্বর তোলা যায়। আজকে আমরা আলোচনা করব পশ্চিমবঙ্গের নদ-নদীর  ম্যাপ পয়েন্টিং সম্পর্কে। প্রসঙ্গত বলে রাখি পরীক্ষার সময় পশ্চিমবঙ্গের নদীগুলি থেকে শুধু একটি মাত্র নদী  প্রদত্ত মানচিত্রে সঠিক সূচক ধারা চিহ্নিত করতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গের নদী গুলিকে ভালভাবে বোঝার জন্য আমরা তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি।  উত্তরবঙ্গের নদী গুলি হল তিস্তা,  মহানন্দা,  জলঢাকা,  তোর্সা,  কালজানি,  রায়ডাক এবং সংকোশ। তবে পরীক্ষায় মহানন্দা এবং তিস্তা নদী ফি বছর ঘুরেফিরে আসে। এদের পাশাপাশি আত্রাই ও পুনর্ভবা নদীটি উল্লেখযোগ্য।


পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চল থেকে বৃষ্টির জলে পুষ্ট যে সকল নদীগুলি পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে ভাগীরথী নদী ও হুগলি নদীতে মিশেছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ময়ূরাক্ষী, অজয়, দামোদর, দ্বারকেশ্বর, শিলাই বা শিলাবতী, কাসাই বা কংসাবতী, এছাড়া কেলেঘাই এবং সুবর্ণরেখা নদী উল্লেখযোগ্য। প্রসঙ্গত দ্বারকেশ্বর ও শিলাবতী নদীর মিলিত প্রবাহ রূপনারায়ন নামে পরিচিত। এই নদী গুলির মধ্যে অজয়,  দামোদর  এবং সুবর্ণরেখা পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।



সবশেষে আসি ভাগীরথী নদীর মোহনা অঞ্চলে পূর্বদিকে সুন্দরবনের নদীগুলির  প্রসঙ্গে।  এই অঞ্চলের নদী গুলি জোয়ার ভাটা জলে পুষ্ট  অসংখ্য খাঁড়ি দ্বারা যুক্ত যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নদী গুলি হল  সপ্তমুখী,  ঠাকুরান, মাতলা,  বিদ্যাধরী, রায়মঙ্গল, গোসাবা,  হাড়িয়াভাঙ্গা ইত্যাদি।  তবে  এই নদীগুলি খুব একটা পরীক্ষায় আসেনা।



আশা করি ওপরের মানচিত্রে দেখানো পশ্চিমবঙ্গের নদীগুলি অনুশীলনের মাধ্যমে তোমরা নিশ্চয়ই পরীক্ষায় ভালো নাম্বার তুলতে পারবে। মানচিত্র অনুশীলনের ক্ষেত্রে যদি কোন বোঝার অসুবিধা সৃষ্টি হয়, তোমরা নিঃসংকোচে কমেন্ট বক্সে সমস্যার কথা জানিও।




Share:

Hoogly Industrial Area Class 9 Geography || হুগলি শিল্পাঞ্চল নবম শ্রেণী ভূগোল || WBBSE

হুগলি শিল্পাঞ্চল

হুগলি শিল্পাঞ্চলের  অবস্থান ও বিস্তার এবং শিল্পাঞ্চল টি  গড়ে ওঠার কারন ব্যাখ্যা কর। 

পশ্চিমবঙ্গে হুগলি নদীর উভয় তীরে উত্তরে ত্রিবেণী থেকে কল্যাণী এবং দক্ষিনে উলুবেড়িয়া থেকে বিড়লাপুর পর্যন্ত প্রায় 100 কিমি দীর্ঘ এবং প্রায় 15 থেকে 20 কিলোমিটার ছড়া হুগলি নদীর উভয় তীরে প্রায় 1600 বর্গ কিমি অঞ্চলজুড়ে পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম এবং ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম হুগলি শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছে। কলকাতা বন্দর শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই শিল্পাঞ্চল বৃহত্তর কলকাতা শিল্পাঞ্চল নামেও পরিচিত। সমগ্র ভারতের মোট শিল্প সংস্থার প্রায় 15% এই অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। 


গড়ে ওঠার কারন


1690 সালের 24 শে আগস্ট জব চার্নক সুতানুটি গোবিন্দপুর ও কলিকাতা নামে তিনটি গ্রাম ক্রয় করে কলকাতার   পত্তন  করেন। ব্রিটিশ বণিকরা এদেশে ক্ষমতা লাভের পর এই শহর ভারতের রাজধানী শহরে পর্যবসিত হয় যা এই শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার পটভূমি সৃষ্টি করে।  পাশাপাশি যেসকল প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক উপাদান গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল -


 প্রাকৃতিক কারন


১) নাব্য নদীপথ


বঙ্গোপসাগর থেকে 128 কিমি অভ্যন্তরে কলকাতা বন্দর হুগলি নদীর বাম তীরে অবস্থিত।  এই সময় গঙ্গার প্রধান ধারা ভাগীরথী হুগলি পথে প্রবাহিত  হত বলে নদীটি ছিল  সুনাব্য।  ফলে আমদানি ও রপ্তানির  যে বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি হয়,  তা এই শিল্পাঞ্চলের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ।


২) ভূমিরূপ


 হুগলি নদীর উভয় তীরে পলি সঞ্চিত হয়ে যে স্বাভাবিক বাধের সৃষ্টি হয়েছে তা ক্রমশ ঢালু হয়ে দুই দিকে প্রসারিত হয়ে যাওয়ায় জলপথ ও শিল্প কারখানা গড়ে তোলা সহজ হয়েছে।


৩) কাঁচামালের প্রাচুর্য


বিভিন্ন শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল যেমন পাট, বাঁশ,  চামড়া এবং ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের প্রয়োজনীয় ইস্পাত সংলগ্ন অঞ্চল থেকে সংগ্রহের বিশেষ সুবিধা থাকায় এই অঞ্চলের বিকাশ সহজ হয়।


৪) শক্তি সম্পদ


কলকাতা বা হুগলি শিল্পাঞ্চল এর অনতি - পশ্চিমেই  রানীগঞ্জ ও ঝরিয়া কয়লা ক্ষেত্র অবস্থিত। তাই প্রয়োজনীয় শক্তি সম্পদ সুলভে  সংগ্রহ করা যায়।


৫) জলসম্পদ


ভাগীরথী হুগলি নদী সুপেয় জলের ধারা বহন করে।  তাই শিল্প  এবং সংলগ্ন জনপদের প্রয়োজনীয় জল সরবরাহ সহজ সাধ্য।


 অর্থনৈতিক কারন

১) উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা


এই শিল্পাঞ্চলটি  পূর্ব,  দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথের বিভিন্ন শাখা প্রশাখাতে  যুক্ত এবং একাধিক জাতীয় সড়ক,  ও অন্যান্য পাকা সড়কের পাশাপাশি বিমানপথ ও নৌপথে ভারতের প্রধান প্রধান বাজার গুলির সাথে  যুক্ত। তাই শিল্প সামগ্রীর চাহিদা অনুসারে  উৎপাদিত পণ্য বাজারে প্রেরণ অত্যন্ত সহজ।  পাশাপাশি শিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ এবং শ্রমিকদের যাতায়াত অত্যন্ত সুবিধাজনক।


২) সুলভ শ্রমিক 


নিম্ন গাঙ্গেয় সমভূমির অন্তর্গত এই অঞ্চলটির জনবসতি প্রকৃতির তাছাড়া জীবিকার তাড়নায় বিহার ও উড়িষ্যা থেকে ছুটে আসা মানুষের ভিড়ে ভরপুর কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে শ্রমিক সুলভই নয়, যথেষ্ট সস্তা। 


৩) মূলধন সরবরাহ


প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রিটিশ ও স্কটিশ বণিক গণের মূলধন বিনিয়োগ এবং পরবর্তীকালে বাঙালি,  মাড়োয়ারি, গুজরাটি শিল্পপতি এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক,  বীমা সংস্থা, শিল্প বিকাশ ব্যাঙ্ক প্রভৃতি সংস্থার মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহের  সহজ সুযোগ শহরটি লাভ করেছে।


৪) উন্নত প্রযুক্তি


 অঞ্চলটি পশ্চিমী কারিগরি বিদ্যায় যথেষ্ট পারদর্শী এবং পরবর্তীতে দেশীয় ও বিদেশী প্রযুক্তির সংযুক্তি ঘটিয়ে উন্নত প্রযুক্তির সুযোগ অঞ্চলটি লাভ করেছে।


৫) ঘনবসতি


 অঞ্চলটি নিবিড় বসতিপূর্ণ হওয়ায়  শিল্পজাত সামগ্রীর চাহিদা সুপ্রচুর।


৬) শিল্পের পরিকাঠামো


ব্রিটিশ শাসনকাল থেকে এই অঞ্চলে শিল্প গঠনে সুন্দর পরিকাঠামো গড়ে ওঠে,  যার ধারা আজও বজায় রয়েছে।


৭) আমদানি ও রপ্তানির সুবিধা


কলকাতা বন্দরের সান্নিধ্য হেতু  আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের সুবিধা অঞ্চলটিতে রয়েছে।


৮ ) ঐতিহাসিক পটভূমি


কলকাতা ছিল ইংরেজদের সবচেয়ে বড় ঘাটি ও ব্যবসা কেন্দ্র। তাই ইংরেজ সরকার নিজেদের স্বার্থেই এই অঞ্চলের শিল্প বিকাশে সহায়তা করে।


উক্ত কারণ গুলির উপর ভিত্তি করে এই অঞ্চলটিতে যে সকল শিল্পের বিকাশ ঘটেছে তারমধ্যে পাট শিল্প, বস্ত্রশিল্প, রাসায়নিক শিল্প, কাগজ শিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, মোটর গাড়ি শিল্প, চর্ম শিল্প এবং অ্যালুমিনিয়াম শিল্প বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 




Share:

Ocean Currents Class 10 Geography || সমুদ্রস্রোত দশম শ্রেণী ভূগোল || WBBSE

সমুদ্রস্রোত


সমুদ্রস্রোত কাকে বলে ?

নিয়ত বায়ুপ্রবাহ, পৃথিবীর আবর্তন গতি, লবণতার তারতম্য,উষ্ণতার পার্থক্য ইত্যাদি কারনে  সমুদ্রের জলরাশি  যখন এক স্থান থেকে অন্যত্র পরিবাহিত হয় তখন তাকে বলে সমুদ্রস্রোত। 


সমুদ্র তরঙ্গ কাকে বলে ?


প্রবল বায়ু তাড়িত হয়ে সমুদ্রের জলরাশি যখন একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ওঠানামা করে বা আন্দোলিত হয়, তখন তাকে বলে সমুদ্র তরঙ্গ বা সমুদ্রের ঢেউ। 


ফেচ  কি ?


বায়ু বিনা বাধায় উন্মুক্ত সাগরে কতটা পথ অতিক্রম করল, সেই দূরত্বকেই ফেচ  দূরত্ব বলে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,  কেননা তরঙ্গের উচ্চতা ও ক্ষমতা এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। 



সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারন গুলি সংক্ষেপে আলোচনা কর ?


সমুদ্রের জলরাশির একস্থান থেকে অন্যস্থানে সঞ্চালনকে সমুদ্রস্রোত বলে।  যে সকল কারনে সমুদ্রস্রোত সৃষ্টি হয়,  তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারন গুলি নিম্নরূপ -


নিয়ত বায়ুপ্রবাহ


সমুদ্র বিজ্ঞানীদের মতে প্রবল নিয়ত বায়ু  প্রবাহই  সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির অন্যতম কারন।  প্রবল নিয়ত বায়ু যখন সমুদ্রের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন জলরাশির উপর  যে প্রভাব ফেলে তার ফলে সমুদ্রের জলরাশি নিয়ত বায়ুর দিকক্রমে  সঞ্চারিত হতে বাধ্য হয়।  


উষ্ণতার পার্থক্য


সমুদ্রের উষ্ণতার মূল উৎস হল সৌরতাপ।  কিন্তু সৌরতাপ  সমুদ্রের কোন অংশে সমানভাবে পড়ে না। নিম্ন অক্ষাংশে সূর্য লম্বভাবে কিরণ  দেওয়ায়  সমুদ্রপৃষ্ঠস্থ জল অধিক উষ্ণ হয় এবং আয়তনে বৃদ্ধি পেয়ে ( ঘনত্ব কমে যায়) বহিঃস্রোত রূপে শীতল অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।  অপরদিকে,  উচ্চ অক্ষাংশে সৌরতাপের পরিমাণ কম থাকায়, সমুদ্রের জল শীতল ও ভারী থাকে,  তাই এই অঞ্চলের  জল অন্তঃস্রোত রূপে উষ্ণ সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়


লবণতার তারতম্য


উষ্ণতা তথা বাষ্পীভবনের পরিমাণ,  নদী ও বৃষ্টির জলের  সংমিশ্রণ,  বরফ গলা জলের সরবরাহ,  ইত্যাদি কারণে সমুদ্র জলের লবনতা পার্থক্য ঘটে।  লবনতা যেখানে বেশি, সেই স্থানের জল তুলনামূলকভাবে অল্প লবণাক্ত জলের তুলনায় ভারী।  এর ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠে জলতলের  উচ্চতার যে পার্থক্য ঘটে তার ফলে অল্প লবণাক্ত জল বহিঃস্রোত রূপে এবং অধিক লবণাক্ত জল অন্তঃস্রোত রূপে একে অপরের দিকে ধাবিত হয় এবং সমুদ্রস্রোত সৃষ্টি করে। 


পৃথিবীর আবর্তন


পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্য যে কেন্দ্র বহিঃ মুখী  সৃষ্টি হয়েছে, তার পরিমাণ সর্বত্র সমান নয়।  নিরক্ষরেখা বরাবর কেন্দ্র বহিঃমুখী শক্তির প্রভাব মেরু অঞ্চলের তুলনায় বেশি। এর প্রধান কারণ মেরু বৃত্ত অপেক্ষা  নিরক্ষরেখার পরিধি অনেক বেশি।  এই বৈষম্যময় কেন্দ্র বহিঃমুখী শক্তির প্রভাবে নিরক্ষীয় অঞ্চলের জল মেরু অঞ্চলের দিকে ধাবিত হয়।


বায়ুর চাপ


বায়ুর চাপ সমুদ্রস্রোত সৃষ্টিতে দুইভাবে ক্রিয়াশীল।  যথা ১.  যেখানে বায়ুর চাপ বেশি, সেই স্থানে সমুদ্রতল অধিক চাপে কিছুটা অবনমিত হয়ে পড়ে।  এই সমতা ফিরিয়ে আনতে সমুদ্র জল সঞ্চারিত হয়। ২.  বায়ুচাপের পার্থক্য বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয় যা সমুদ্র জল কে এক স্থান থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত হতে সাহায্য করে। 


বাষ্পীভবনের পরিমাণ ও বৃষ্টিপাত


যে স্থানে বাষ্পীভবনের পরিমাণ বেশি সেই স্থানে সমুদ্রের জলতল  কিছুটা অবনমিত হয়ে পড়ে, তাই পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের জল ওই স্থানের দিকে স্থানান্তরিত হয়। পাশাপাশি বৃষ্টিপাত অধিক হলে সমুদ্রের জলতল  কিছুটা উঁচু হয়ে ওঠে এবং বৃষ্টির জল হওয়ায় এর ঘনত্ব কম তাই এই জল বহিঃস্রোত রূপে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে সঞ্চালিত হয়।  


উক্ত কারন গুলির পাশাপাশি সামুদ্রিক জোয়ার ভাটা, মহাদেশ গুলির অবস্থান, বিভিন্ন সমুদ্রস্রোতের পারস্পারিক মিলন, উপকূল ভাগের আকৃতি, ঋতু পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয় গুলি সমুদ্রস্রোতকে  আংশিক পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ করে।  



Share:

Atmospheric Temperature Class 10 || বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা এবং তারতম্যের কারণ দশম শ্রেণী || WBBSE

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বলতে কী বোঝ ?  উষ্ণতার তারতম্যের কারণ গুলি আলোচনা কর ?


বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার মূল উৎস সূর্য হলেও পৃথিবীর সর্বত্র সূর্যের তাপীয় ফলের প্রভাব সমানভাবে বন্টিত হয় না এবং কতগুলি বিশেষ প্রাকৃতিক কারণে ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতার তারতম্য হওয়ায়, সংলগ্ন বায়ুমন্ডলে উষ্ণতার পার্থক্য দেখা যায় । অর্থাৎ পৃথিবীর সর্বত্র উষ্ণতার পরিমাপ এক  প্রকার নয়।  যে সকল কারনে অঞ্চল ভেদে বায়ুমন্ডলে উষ্ণতার তারতম্য ঘটে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কারন গুলি হল -


১) সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল 


সূর্য কিরণ থেকে যে তাপ  ক্ষুদ্র তরঙ্গে পৃথিবীতে উপনীত হয় তাকে সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল বলে ।  তাপীয় ফলের 34 শতাংশ মহাশূন্যে প্রত্যাগমন করে যাকে অ্যালবেডো বলে।  বাকি অবশিষ্ট 66 শতাংশ ভূপৃষ্ঠ কে উত্তপ্ত করে, যা কার্যকরী সৌর বিকিরণ নামে পরিচিত।  কিন্তু সূর্য রশ্মির পতন কোণের পার্থক্যে  তাপীয় ফলের প্রভাব সর্বত্র সমান ঘটে না।  ফলে বায়ুমন্ডলে উষ্ণতার তারতম্য ঘটে। 


২) অক্ষাংশ


অক্ষাংশের সাথে সূর্যালোকের পতন কোণের  সম্পর্ক রয়েছে।  নিম্ন অক্ষাংশে বা নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্য লম্বভাবে কিরণ দিলেও অক্ষাংশ বৃদ্ধির সাথে সাথে ভূপৃষ্ঠে সূর্যালোক ক্রমশ তীর্যকভাবে পতিত হয়। লম্বভাবে পতিত রশ্মি বায়ুমণ্ডলের অল্পস্তর  ভেদ করে ভূপৃষ্ঠে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ে কিন্তু তীর্যকভাবে  পতিত রশ্মি বায়ুমণ্ডলের অধিক স্তর ভেদ করে বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।  তাই নিম্ন অক্ষাংশ থেকে উচ্চ অক্ষাংশের দিকে বায়ুর উষ্ণতা ক্রমশ কমতে থাকে। 


৩) উচ্চতা


উচ্চতার সাথে  উষ্ণতার সম্পর্ক  অত্যন্ত নিবিড়।   ট্রপোস্ফিয়ারের প্রতি 1 কিমি উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা 6.4 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হারে হ্রাস পায়। তাই সমুদ্র সমতল থেকে যে স্থান যত উঁচুতে অবস্থিত,  সেই স্থানের উষ্ণতা তত কম।  এই কারণেই শিলিগুড়ি অপেক্ষা দার্জিলিংয়ের জলবায়ু শীতল প্রকৃতির। 


৪) ভূমিরূপ


ভূমিরূপ এর পার্থক্যে  উষ্ণতার পার্থক্য সূচিত হয়।  সমগ্র পৃথিবীকে পার্বত্য ভূমি, মালভূমি ও সমভূমি এই তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় এবং এই তিনটি ভূমিরূপের  উচ্চতা, বন্ধুরতা  এবং অবস্থানগত যে পার্থক্য রয়েছে তার ফলে উষ্ণতার সুস্পষ্ট পার্থক্য ঘটে।


৫) ভূমিভাগের ঢাল


ভূমি ভাগের ঢালের সাথে উষ্ণতার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়।  উত্তর গোলার্ধের দক্ষিন  দিকের ঢালু  জমি এবং দক্ষিণ গোলার্ধের উত্তর দিকের ঢালু জমিতে সূর্যালোক সরাসরি পতিত হয়,  তাই বিপরীত  ঢাল গুলির তুলনায়  এই  ঢাল গুলিতে উষ্ণতা তুলনামূলক ভাবে  অনেক বেশি।  এই কারণে হিমালয় পর্বতের উত্তর ঢালের তুলনায় দক্ষিণ ঢালে অনেক বেশি মানুষ বসবাস করে।


৬) সমুদ্র থেকে দূরত্ব


যে স্থান থেকে যত দূরে অবস্থান করে, সেই স্থানের উপর সামুদ্রিক প্রভাব  তত হ্রাস পায় ফলে দূরবর্তী স্থান গুলির উষ্ণতা চরমভাবাপন্ন হয়।  উদাহরণ হিসেবে বলা যায় বিহারের গয়া এবং পাকিস্তানের করাচি একই অক্ষাংশে অবস্থান করলেও গয়ার তুলনায়  সমুদ্রতীরবর্তী করাচির উষ্ণতা অনেক বেশি মৃদু।


৭) সমুদ্রস্রোত


সমুদ্রস্রোত দুই প্রকারের হয়, উষ্ণ ও শীতল।  উষ্ণ সমুদ্র স্রোতের প্রভাবে সংশ্লিষ্ট ভূমি ভাগের উষ্ণতা বেড়ে যায় এবং শীতল সমুদ্র স্রোতের প্রভাবে পার্শ্ববর্তী ভূমি ভাগের উষ্ণতা কমে যায়।  আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তর  উপকূল বরাবর   উষ্ণ উত্তর আটলান্টিক স্রোত প্রবাহিত হওয়ায় শীতকালেও এই উপকূল বরফ মুক্ত থাকে।  অপরদিকে ল্যাব্রাডর উপকূল তুলনামূলকভাবে নিম্ন অক্ষাংশে অবস্থান করা সত্ত্বেও শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রভাবে  শীতকালে বরফাবৃত হয়ে পড়ে। 


৮ ) অরণ্য ভূমি


অরণ্যভূমির উপস্থিতি এবং বিস্তার সংলগ্ন অঞ্চলের  আর্দ্রতা ও বৃষ্টিপাতকে নিয়ন্ত্রণ করায়  বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা উন্মুক্ত প্রান্তরের তুলনায় অরণ্যভূমি সংলগ্ন অঞ্চলে অনেক কম হয়।  এই কারণে গ্রীষ্মের দাবদাহে গাছের ছায়া অনেক বেশি আরামপ্রিয়।


৯) মৃত্তিকা ও খনিজ


মৃত্তিকার জল ধারণ ক্ষমতা, বর্ণ এবং খনিজের উপস্থিতি প্রত্যক্ষভাবে উষ্ণতা কে নিয়ন্ত্রণ করে।  যে সকল মৃত্তিকা হালকা বর্ণের এবং খনিজের প্রাচুর্য রয়েছে, সেই সকল মৃত্তিকায় তাপ শোষণ এর তুলনায় বিকিরণ বেশি হয় ফলে সংলগ্ন স্থানের উষ্ণতা চরমভাবাপন্ন হয়। অন্যদিকে মৃত্তিকা গাঢ় বর্ণের হলে বিকিরণ এর তুলনায় শোষণ অনেক বেশি হয়,ফলে উষ্ণতা কিছুটা মৃদু হয়। 


১০) বায়ুপ্রবাহ


বায়ুপ্রবাহ তার প্রবাহ পথে উৎপত্তি স্থানের ছাপ রেখে যায়।  অর্থাৎ শীতল অঞ্চল থেকে আশা বায়ু প্রবাহে উষ্ণতা কমে যায় । এই কারনে আমাদের দেশে ডিসেম্বর জানুয়ারি মাসে মধ্য এশিয়ার শীতল বায়ু আবির্ভাব ঘটায় উষ্ণতা অনেক হ্রাস  পায়।  শীত ও বসন্ত ঋতুতে রকি পর্বতের পূর্ব ঢালে চিনুক নামে এক প্রকার উষ্ণ বায়ুর আগমন ঘটে তার ফলে তুষার জমতে পারে না। 


১১) পর্বতের অবস্থান ও বিস্তার


পর্বতের বিস্তার প্রত্যক্ষভাবে সৌরতাপ লাভ এবং বায়ু প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে যা উষ্ণতার পরিবর্তন ঘটায়।  উদাহরণ হিসেবে আমাদের দেশের উত্তর সীমা বরাবর সুউচ্চ হিমালয় পর্বতমালা প্রাচীরের ন্যয় দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু একই অক্ষাংশে অবস্থিত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে  অনুরূপ কোন  পর্বত না থাকায় আমেরিকা মহাদেশ অনেক বেশি শীতল।


১২) মেঘ ও বৃষ্টি


মেঘাচ্ছন্নতা প্রত্যক্ষ সৌর বিকিরণে বাধা সৃষ্টি করে এবং বৃষ্টিপাত হলে অধিক পরিমাণে সৌরতাপ শোষিত হয়। ফলে মেঘ-বৃষ্টির আধিক্য ঘটলে সেই স্থানের উষ্ণতা তুলনামূলকভাবে কম হয়। তবে রাত্রিকালে আকাশে মেঘ থাকলে, পৃথিবী থেকে বিকিরিত তাপ মহাশূন্যে প্রত্যাগমনে বাধা পায়। এই কারণে মেঘমুক্ত রাত্রি অপেক্ষা মেঘাচ্ছন্ন রাত্রের উষ্ণতা বেশি হয়।


১৩) মানুষের কার্যাবলী


সর্বোপরি মানুষের বিভিন্ন প্রকার কার্যাবলী উষ্ণতা কে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে।  বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় একদিকে অরণ্যভূমির উৎখাত, অপরদিকে অত্যাধুনিক যে সকল উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে এবং পরিবহন ব্যবস্থার যে বিকাশ ঘটেছে,  এদের থেকে নির্গত দূষিত বর্জ্য পদার্থ ও গ্যাস বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা কে বাড়িয়ে দিয়েছে।  এই কারনেই শিল্পনগরীর উষ্ণতা অন্যান্য শহরের তুলনায় অনেক বেশি। 




Share:

Anticyclone Class 10 Geography || প্রতীপ ঘূর্ণবাত দশম শ্রেণী ভূগোল || WBBSE

প্রতীপ ঘূর্ণবাত কাকে বলে ?


ভূপৃষ্ঠের অল্প পরিসর স্থান জুড়ে  তীব্র উচ্চচাপ গঠিত হলে,   ওই উচ্চচাপ  কেন্দ্র থেকে বায়ু ঘুরতে ঘুরতে নিম্নমুখী পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের তুলনামূলক ভাবে নিম্নচাপের দিকে বেরিয়ে আসে.  তবে এই বায়ু,  নিয়ত বায়ুর মত উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে আবর্তিত হয়.  অর্থাৎ এর উৎপত্তির কারণ এবং এর গতিপথ,  ঘূর্ণবাতের ঠিক বিপরীত বলে একে  প্রতীপ  ধন্যবাদ বলে।  প্রসঙ্গত 1861 সালে  স্যার ফ্রান্সিস গ্যালটন ঘূর্ণবাতের ঠিক বিপরীত ধর্ম লক্ষ্য করে একে Anticyclone নামে চিহ্নিত করেন। তাই বাংলায় এরনাম প্রতীপ ঘূর্ণবাত।  প্রতীপ ঘূর্ণবাত আকস্মিক বায়ু হলেও এর আবির্ভাবে  আকাশ নির্মল ও পরিষ্কার থাকে তবে  শৈত্য  প্রবাহ বেড়ে যায়। 


ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাত এর একটি তুলনামূলক আলোচনাঃ


ঘূর্ণবাত

প্রতীপ ঘূর্ণবাত

১) ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে তীব্র নিম্নচাপ অবস্থান করে।

১)  প্রতিপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে উচ্চচাপ বিরাজ করে।

২)  ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে বায়ু, নিয়ত বায়ুর বিপরীতক্রমে আবর্তিত হয়ে প্রবাহিত হয়। 

২)  প্রতিপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে  বায়ু,  নিয়ত বায়ুর দিকক্রমে আবর্তিত হয়। 

৩)   ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে বায়ু কেন্দ্রমুখী ও অন্তর্গামী হয়।

৩)  প্রতীপ ঘূর্ণবাতের  কেন্দ্রে বায়ু নিম্নমুখী ও বহির্গামী হয়। 

৪)  ঘূর্ণবাত বিধ্বংসী হলেও ক্ষণস্থায়ী। 

৪)  প্রতীপ ঘূর্ণবাত দীর্ঘস্থায়ী ও দুর্বল প্রকৃতির হয়।

৫ )  ঘূর্ণবাতের আবির্ভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়।  

৫ )  প্রতীপ ঘূর্ণবাত এর আবির্ভাবে  শান্ত  ও শীতল আবহাওয়ার  সৃষ্টি হয়।




Share:

Difference between Tropical and Temperate Cyclone Class 10 || ক্রান্তীয় ও নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের মধ্যে পার্থক্য দশম শ্রেণী || WBBSE

ক্রান্তীয় ও নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের মধ্যে পার্থক্য লেখ

নাতিশীতোষ্ণ এবং ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের উৎপত্তির মূল কারণ তীব্র নিম্নচাপ হলেও এদের মধ্যে উৎপত্তিগত কিছু সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। এগুলি নিচে আলোচনা করা হল-



ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত

নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত

১) ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত প্রধানত গ্রীষ্ম ও শরৎ ঋতুতে দেখা যায়।

১)  নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত প্রধানত  শীত ঋতুতে দেখা যায়।

২) এই প্রকার ঘূর্ণবাত  ক্রান্তীয় মন্ডলের  উষ্ণ সমুদ্র বক্ষে  উৎপত্তি লাভ করে। 

২)  এই প্রকার  ঘূর্ণবাত,  স্থলভাগ ও জলভাগ  উভয় অঞ্চলে  সৃষ্টি হয়।

৩)  ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতে  সীমান্ত গঠিত হয় না। 

৩)  নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত  সীমান্তের উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি লাভ করে। 

৪)  ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত অত্যন্ত প্রবল ও বিধ্বংসী হয়।

৪)  এই প্রকার ঘূর্ণবাত তুলনামূলক ভাবে কম শক্তিশালী। 

৫)  ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের  কেন্দ্রটি শান্ত ও নির্মল প্রকৃতির হয়। 

৫)  নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রটি অশান্ত হয়। 

৬) ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে বায়ু নিম্নগামী হয়। 

৬)  নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের  কেন্দ্রে বায়ু ঊর্ধ্বগামী হয়। 

৭) ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের বজ্রবিদ্যুৎ সহকারে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটে। 

৭)  নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত একটানা কয়েকদিন হালকা বৃষ্টিপাত ঘটে। 

 


Share:

Popular Posts

Recent Posts

Total Pageviews