Topographical Map 45 D/10 Explanation for Class 12 টোপোম্যাপ ৪৫ ডি/১০ বিস্তারিত আলোচনা দ্বাদশ শ্রেণী ভূগোল

প্রদত্ত ভূসংস্থানিক মানচিত্রটির নম্বর 45 D/10 যা ভারতের গুজরাট রাজ্যের বানসকাঁথা জেলা  এবং রাজস্থান রাজ্যর শিরহী জেলার অংশ বিশেষ। প্রতিনিধিত্বমূলক স্কেল 1:50,000 অনুসারে  মানচিত্রটির মোট ভৌগোলিক আয়তন আনুমানিক 716 বর্গ কিমি এবং  অঞ্চলটি  24 ডিগ্রি 30 মিনিট উত্তর অক্ষাংশ থেকে 24 ডিগ্রী 45 মিনিট উত্তর অক্ষাংশ এবং 72 ডিগ্রি 30 মিনিট পূর্ব থেকে 72 ডিগ্রী 45 মিনিট পূর্ব দেশান্তর রেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এটি একটি 15 মিনিট 15 মিনিট শীট যা 1959-1960 সালে অঞ্চলটি ভারতীয় সর্বেক্ষণ বিভাগের দ্বারা প্রথমবারের জন্য জরিপ করা হয় এবং 1961 সালে ভুসংস্থানিক মানচিত্র হিসাবে এর প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। অঞ্চলটির চৌম্বক নতি 1/4° পশ্চিম, যা ১৯৬০ সাল থেকে 1° হারে কমে আসছে। মানচিত্রে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট আর্থ-সামাজিক ভূ-দৃশ্যাবলীর পাশাপাশি 20 মিটার ব্যবধানের সমোন্নতি রেখা দ্বারা ভূমিরূপ দেখানো হয়েছে। মানচিত্রের দক্ষিণপূর্ব অংশের পার্বত্য অঞ্চলে ও পর্ণমোচী ধরনের বনভূমি রয়েছে এবং বাকি স্থানে ছোট ছোট ঝোপ এবং কাটা জাতীয় উদ্ভিদ দেখতে পাওয়া যায়।  অঞ্চলটির প্রধান নদী হল সিপু, সুকলি এবং জাম্বুয়া যাদের শুষ্ক নদীখাত উত্তর-পূর্ব দিক থেকে দক্ষিণ পশ্চিমে বিস্তৃত। মানচিত্রের দক্ষিণ পূর্বে একমাত্র পৌর জনবসতি তথা শৈল শহর হল মাউন্ট আবু এবং বাকি অংশে বেশকিছু গ্রামীণ জনবসতি দেখা যায় যেগুলি পাকা সড়ক পথ দ্বারা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত।

Source:https://www.surveyofindia.gov.in/pages/educational-map-series

প্রাকৃতিক সামাজিক ভূ-দৃশ্যাবলীর তালিকা

ভূ-সংস্থানিক মাপদন্ড                   

ভূ-প্রাকৃতিক একক

পার্বত্য অঞ্চল

ক্ষয়জাত সমভূমি

বিস্তার

দক্ষিন-পুর্ব

বাকি অংশ

আনুমানিক বিস্তার

30%

70%

সর্বচ্চো  উচ্চতা

1426m

300m

সর্বনিম্ন উচ্চতা

300m

225m

আপেক্ষিক উচ্চতা

1126m

75m

সর্বচ্চো ঢাল

19°03’54”

1°47’58”

সর্বনিম্ন ঢাল 

15°23’14”

0°53’04”

সাধারণ ঢাল 

দক্ষিণ পুর্ব দিক থেকে পশ্চিমে 

জলনির্গমন পরিসংখ্যা

অধিক 

মধ্যম 

জনবসতি

মুখ্যশহর

বিক্ষিপ্ত 

যোগাযোগ ব্যাবস্থা

উন্নত 

মধ্যম

*Source: Topographical map sheet number 45 D/10.


ভূ-প্রাকৃতি (PHYSIOGRAPHY)

প্রদত্ত মানচিত্রে নির্দেশিত অঞ্চলটি দুটি স্বতন্ত্র ভূ প্রাকৃতিক বিভাগের বিভক্ত। প্রকৃতপক্ষে এটি আরাবল্লী পর্বতের পশ্চিম ঢালের অংশ বিশেষ । আরাবল্লী পর্বতের 1400 মিটারের বেশি উচ্চতা বিশিষ্ট  শৈলশিরা গুলি উত্তর-পূর্ব দিক থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে সমান্তরালে অবস্থান করছে। অপরদিকে মানচিত্রের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ক্ষয় যত সমভূমি যার স্থানে স্থানে উন্মুক্ত পাথরের টিলা দেখা যায়। বৈচিত্রহীন এই সমভূমি অঞ্চলের  উচ্চতা 100 থেকে 260 মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। পশ্চিম থেকে পূর্বের দিকে অঞ্চলটির গড় ঢাল ক্রমে বৃদ্ধি পেয়েছে। 

চূড়া 

অবস্থান 

উচ্চতা (mtrs.)

কুয়েকা পাহাড় 

C3

1401

ভীমালি কা পাহাড় 

C3

1387

দেওলি 

C3

1352

রামকুন্ড কা পাহাড় 

C2

1327

আথভী পাহাড় 

C2

1277

কালিয়া ডুঙ্গার 

B2

639

ভূনি মাগরি 

C2

437

হরা মাগরা

A2

413

*Source: Topographical map sheet number 45 D/10.

জলনির্গমন প্রণালী (DRAINAGE)

বেসীরভাগ নদী গুলি অনিত্য প্রকৃতির। তাই বর্ষাকালে নদিতে জল থাকলেও গ্রীষ্মকালে শুকিয়ে যায়। সমভূমি অঞ্চলের নদী গুলির উর্ধ্ব প্রবাহে জলনির্গমন প্রণালীর আকৃতি পাখা বা বৃক্ষরূপী প্রকৃতির। এই অঞ্চলের প্রধান নদী সিপু যা মাউন্ট আবুর উত্তরে উৎপত্তি লাভ করে দক্ষিণ পশ্চিমে দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এর নদী খাতের চওড়া স্থান বিশেষে ৫০০ মিটারের বেশি দেখা যায়। সিপু নদীর ডান তীরের উপনদী গুলি হল সুকলি, উন্ডা ওয়ালা এবং ডিওর নদী। অপরদিকে বাম তীরের উপনদী গুলি হল সুকলি, ধাবলি, দেবাঙ্গন এবং গোগুয়া নদী। অপরদিকে আরাবল্লীর পার্বত্য এলাকায় কেন্দ্র বিমুখী, সমান্তরাল, আয়তাকার প্রভৃতি জলনির্গময় প্রণালী দেখা যায়। যেহেতু অঞ্চলটি মরুভূমির নিকটবর্তী, তাই জলের আঘাতের শিথিল মাটি খুব সহজেই ধুয়ে যায় এবং জলধারা গুলি একাধিক সুস্পষ্ট নদীখাত সৃষ্টি করে।

জলবায়ু (CLIMATE)

পশ্চিম ভারতে অবস্থানের কারণে অঞ্চলটিতে দেশের বাকি অংশের থেকে তুলনামূলকভাবে কম পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয় যার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫০ থেকে ১০০ সেমির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা যেমন ৪৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর উপর উঠে যায় তেমনি ডিসেম্বর জানুয়ারি মাসে রাতের বেলায় প্রায়শই তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছে চলে আসে। অত্যধিজ তাপমাত্রা অধিক বাষ্পিভবনে সাহায্য করে যার ফলে মরু উদ্ভিদের সৃষ্টি হয়েছে।

            ● গ্রষ্মকাল ( উষ্ণ শুষ্ক )- মার্চ থেকে জুন।
            ● বর্ষাকাল ( উষ্ণ আর্দ্র )- জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ।
            ● শীতকাল ( শুষ্ক শীতল )- অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারী।

স্বাভাবিক উদ্ভিদ (NATURAL VEGETATION)

অঞ্চলটি দক্ষিণ-পশ্চিমে আরাবল্লীর পার্বত্য অঞ্চলে ঘন পর্ণমোচী বৃক্ষের বনভূমি দেখা যায় যা মানচিত্রে প্রায় 40 শতাংশ স্থান অধিকার করে রয়েছে। প্রধানত দু প্রকার বনভূমি এখানে দেখা যায়, যেমন বাঁশ ও শাল গাছের ঘন বনভূমি এবং অন্যদিকে সমভূমি অঞ্চলে যেখানে কৃষিকাজ অনুশীলন করা হয় না সেখানে কাঁটা জাতীয় ঝোপ ঝার, পাম ও ঘাসের জংল।
জীবিকা (OCCUPATION)

সমভূমি অঞ্চলের প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রামবাসী ঘোড়া, উট, ভেড়া ইত্যাদি গবাদি পশু প্রতিপালন করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে। পাশাপাশি মাউন্ট আবু শৈল শহরে একাধিক সামাজিক পরিষেবা কেন্দ্রীভূত হওয়ায় শহরে বসবাস কারী মানুষের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণীর অর্থনৈতিক কার্যাবলীর সাথে যুক্ত। খুব স্বল্প পরিমাণ মানুষ আরাবল্লীর পাদদেশে অবস্থিত বনবস্তি গুলিতে কাঠ চেড়াই শিল্পের সাথে যুক্ত। জলবায়ুর সাথে সঙ্গতি রেখে যে সকল শস্য চাষ করা হয়ে থাকে তা নিম্নরূপ।

            ● শীতকাল ( রবি শস্য ): – গম, বার্লি এবং তুলা।
            ● বর্ষাকাল ( খারিপ শস্য): – বাজরা, জোয়ার, ভূট্টা।

জনবসতি (SETTLEMENTS)

প্রদত্ত ভৌগলিক অঞ্চলের প্রধান জনবসতি তথা মুখ্য প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হল মাউন্ট আবু। অপরদিকে সমভূমি অঞ্চলে একাধিক ছোট ও মাঝারি জনপদ দেখা যায় যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জনপদ হল আনাদ্রা, রেভদার, দান্তারি, দাত্তানি ইত্যাদি। নাগরিক পরিষেবার ভিত্তিতে জনবসতিগুলির একটি ক্রম তালিকা দেওয়া হলো।

বসতি

অবস্থান

রকম 

নাগরিক পরিসেবা 

ABU

C2

কেন্দ্রীভূত জনবসতি

থানা, ডাক বাংলো, হাঁসপাতাল,ইন্সপেকশন বাংলোসরকারি হাইস্কুল, যুব ছাত্রাবাস, পাঠাগার, সোফিয়া হাইস্কুল, রেস্ট-হাউস, হোটেল,পশু-হাঁসপাতাল, মন্দির, চার্চ, ব্যাংক, পৌরসভা, ক্লাব , পাওয়ার হাউস। 

আনাদ্রা

B2

মাঝারি ঘন জনবসতি

পোস্ট টেলিগ্রাফ অফিস,ডাক-বাংলো, থানাঔষধালয়, মন্দির 

রেভদার

A2

মাঝারি ঘন জনবসতি

পোস্ট টেলিগ্রাফ অফিস,ডাক-বাংলো,থানা,মন্দির

দান্তারি 

A1

মাঝারি ঘন জনবসতি

পোস্ট অফিস,থানা, মন্দির

পামেরা 

B1

মাঝারি ঘন জনবসতি

পোস্ট অফিসথানা

সিরোরি

C1

মাঝারি ঘন জনবসতি

পোস্ট অফিস, ঔষধালয় 

দাত্তানি 

B3

বিক্ষিপ্ত বসতি 

পোস্ট অফিস, মন্দির

ডোলপুরা 

B3

বিক্ষিপ্ত বসতি 

মন্দির 

রামপুর খেরিয়া 

A3

বিক্ষিপ্ত বসতি 

মন্দির

আসাওয়া

C1

ক্ষুদ্র বসতি 

নেই

ফতেপুরা 

A3

ক্ষুদ্র বসতি 

নেই

বাগেরি 

C3

ক্ষুদ্র বসতি 

নেই

ধাবলি 

B3

ক্ষুদ্র বসতি 

নেই

*Source: Topographical map sheet number 45 D/10.

পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা (TRANSPORT and COMMUNICATIONS)

অঞ্চলটির পশ্চিমে রেভদার থেকে পূর্ব দিকে সিররি পর্যন্ত ১৬৮ নং জাতীয় সড়ক প্রসারিত রয়েছে। অপরদিকে মাউন্ট আবু এর সাথে অপর একটি সড়ক পথ আবু রোড এর সাথে যুক্ত। এছাড়াও প্রায় অসংখ্য প্রধান ও অপ্রধান সড়ক পথ অঞ্চলটিকে জালের মত ধরে রেখেছে। এদের মধ্যে কিছু পথ শুধুমাত্র শুষ্ক ঋতুতে পরিবহনের যোগ্য। সড়ক পথের পাশাপাশি পশ্চিম থেকে উত্তর পূর্বে এবং পশ্চিম থেকে দক্ষিণে প্রধান বিদ্যুতের সরবরাহ কারী লাইন রয়েছে।
উপসংহার (CONCLUSION)

সবশেষে উপসং হারে বলা যায় যে প্রাকৃতিক ও আর্থসামাজিক মাপকাঠির বিচারে অঞ্চলটিতে একটি তীব্র পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। আরাবল্লীর পার্বত্য অঞ্চল দূর্গম হওয়া সত্বেও শুধুমাত্র পর্যটকের আনাগোনা থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য, স্কুল কলেজ, বিনোদন প্রভৃতি নাগরিক পরিষেবার কেন্দ্রীভবন ঘটেছে। আধুনিক শৈল শহর গড়ে উঠেছে। অপরদিকে সমভূমির জনবসতি গুলি আজো আধুনিক নাগরিক পরিসেবা থেকে অনেক দূরে অনুন্নয়ন এর ধারক হিসেবে অবস্থান করছে।

B}|lkxzmkx|C
Share:

No comments:

Post a Comment

Popular Posts

Recent Posts

Total Pageviews