Geo Tectonic Force Class XII Chapter 1.1 ভূমিরূপ গঠনকারী শক্তি দ্বাদশ শ্রেণী ভূগোল

Class XII
Geo Tectonic Force (ভূমিরূপ গঠনকারী শক্তি)
Chapter 1.1

  • সাধারণভাবে ভূপৃষ্ঠের যে অবয়ব বা রূপ যেমন সমভূমি মালভূমি পাহাড় এবং পর্বতকে একসাথে ভূমিরূপ বলা হয়।

  • পৃথিবীতে সবার প্রথম মহাদেশ ও মহাসাগরের সৃষ্টি হয়েছিল বলে এদের প্রাথমিক ভূমিরূপ বলে।

  • অপরদিকে সমভূমি মালভূমি পাহাড় পর্বতকে মাধ্যমিক  ভূমিরূপ বা দ্বিতীয় পর্যায়ের বা সেকেন্ডারি ল্যান্ডফর্ম বলে।

  • এরপর বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি যেমন নদী বায়ু হিমবাহ সমুদ্র তরঙ্গ পুঞ্জিত হয় প্রভৃতি এই দ্বিতীয় পর্যায়ের বা মাধ্যমিক ভূমিরূপকে ক্ষয় বহন সঞ্চয়ের মাধ্যমে পরিবর্তন করে যে ভূমিরূপে সৃষ্টি করে তাদের তৃতীয় পর্যায়ের ভূমিরূপ বা টার্শিয়ারি ল্যান্ডফর্ম বলে।

  • আঁকাবাঁকা নদীপথ,  জলপ্রপাত,  ব-দ্বীপ,  প্লাবনভূমি,  ইনসেলবার্জ,  গৌড়,  ইয়ারদাং,  জুইগান, মরুদ্যান,  ক্র্যাগ এন্ড টেল,  বহিঃবিধৌত সমভূমি, এরিটি, সার্ক বা করি, প্রভৃতি হল তৃতীয় পর্যায়ের ভূমিরূপ। 

  • J A Steer তার Unstable Earth বইতে বলেছেন পৃথিবীর কোন অংশে সুস্থিত নয়।

  • অর্থাৎ পৃথিবীর ভূমিরূপ গুলি দীর্ঘদিনের ব্যবধানে নিজেদের উচ্চতা ও রূপ পরিবর্তন করছে।

  • যে শক্তির দ্বারা ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন সাধন ঘটে তাকে ভূমিরূপ গঠনকারী শক্তি বা টেকটনিক ফোর্স বলে।

  • গ্রিক শব্দ টেকটন কথার অর্থ নির্মাতা।

  • এই শক্তির দ্বারা ভূমিরূপের গঠন বা নির্মাণ হয় বলে একে টেকনিক ফোর্স বা Diastrophism বলে।

  • এই ভূমিরূপ গঠনকারী শক্তি আকস্মিক বা হঠাৎ করে সৃষ্টি হতে পারে আবার ধীর প্রক্রিয়ায় কাজ করতে পারে।

  • ভূমিকম্প অগ্নুৎপাত  প্রভৃতির দ্বারা হঠাৎ করে ভূমিরূপের পরিবর্তন হতে পারে বলে একে আকস্মিক প্রক্রিয়া বা  Sudden Movement বলে।

  • মানব সভ্যতার উপর এই আন্দোলনের খারাপ প্রভাব বেশী পরলেও ভূমিরূপের উপর প্রভাব নগন্য।

  • অপরদিকে যখন কোটি কোটি বছর ধরে ভূমিরূপের ধীরে ধীরে উত্থান বা অবনমন ঘটে তাকে ধীর প্রক্রিয়া বলে।

  • এই ধির প্রক্রিয়াকে আবার মহীভাবক আলোড়ন ও গিরিজনি আলোড়নে বিভক্ত করা যায়।

  • গ্রিক শব্দ Epeiros কথার অর্থ হল মহাদেশ। 

  • Epeirogenic Movement বা মহিভাবক আলোড়নে পৃথিবীতে মূলত মহাদেশ ও মহাসাগরের সৃষ্টি হয়েছিল।

  • মহিভাবক আলোড়ন পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বরাবর বা উলম্ব বা খাড়াভাবে কাজ করে ফলে ভূমিরূপ উপরে উঠে যায় অথবা নিচে বসে যায়।

  • মহিভাবক আলোড়ন সমগ্র মহাদেশ জুড়ে সম্পন্ন হলেও স্থানীয় ভাবে এর ফলাফল বেশি দেখা যায়। 

  • এই আলোড়নে বিশাল আয়তন মালভূমি,  গ্রস্ত উপত্যকা,  চ্যুতি, স্তুপপর্বত , ভৃগুতট প্রভৃতি সৃষ্টি হয়।

  • যে ভূগাঠনিক প্রক্রিয়া, পৃথিবীর স্পর্শক বরাবর অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠের সাথে অনুভূমিকভাবে কাজ করে তাকে গিরিজনি আলোড়ন  বা Orogenic Movement বলে।

  • গ্রিক শব্দ Oros কথার অর্থ হল  পর্বত।

  • গিরিজনি আলোড়নের ফলে শিলাতে ভাঁজ পড়ে এবং ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়।

  • গিরিজনই আলোড়নের ফলে ইউরোপের জুরা পর্বত,  আফ্রিকার আটলাস পর্বত,  এশিয়ার হিমালয়, ইউরোপের আল্পস,  উত্তর আমেরিকার রকি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দিজ প্রভৃতি ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়েছে।

  • এই আলোড়নের ফলে শিলাতে যে ভাঁজ পড়ে তার উঁচু অংশগুলোকে ঊর্ধ্বভঙ্গ এবং নিচু অংশগুলোকে অধোভঙ্গ বলে।

  • প্রবল অনুভূমিক সংকোচন বলের ভাবে যখন ভূপৃষ্ঠের  শিলাস্তরে ভাজের সৃষ্টি হয় তাকে বলে Fold বা বলি বা ভাঁজ। 

  • শিলাস্তরের উপর প্রযুক্ত সংকোচন ও সংনমন বলের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে শিলাস্তর ফেটে যায় এবং শিলাস্তরে ফাটল ও চ্যুতি বা সংস্র দেখা যায়। 

  • ভাজযুক্ত শিলাস্তরের ঊর্ধ্বভঙ্গে যদি আমরা একটি উলম্ব অক্ষ (Axis) কল্পনা করি তবে তার দুপাশের হেলে পড়া শিলার স্তরকে ভাজের বাহু বা Arm বলে।  

  • অনুভূমিক তলের সাথে ভাঁজের বাহু যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে বলে নতি বা Dip. 

  • নতিকে  প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায় যেমন প্রকৃত নতি এবং আপাত নতি।

  • অনুভূমিক তল  শিলাস্তরকে যে রেখা বরাবর ছেদ করে তাকে আয়াম বা Strike বলে।

  • ভূগাঠনিক শক্তির প্রভাবে যখন শিলাস্তরের একটি বড় অংশ খাড়াভাবে উপরে উঠে যায় অথবা বসে যায় তাকে বলে চ্যুতি।

  • চ্যুতির ফলে ভূপৃষ্ঠের যে অংশটি উপরে উঠে যায় তাকে বলে স্তূপ পর্বত।

  • ভারতের  বিন্ধ পর্বত,  সাতপুরা পর্বত প্রভৃতি  স্তুপ পর্বতের উদাহরণ।

  • অপরদিকে দুটি স্তুপ পর্বতের মাঝের অংশ বসে গেলে তাকে গ্রস্ত উপত্যকা বলে।

  • নর্মদা ও তাপ্তি নদীর উপত্যকা গ্রস্ত উপত্যকার উদাহরণ।

  • স্যার অ্যালফ্রেড ওয়েগনার তার চলমান মহাদেশ তত্ত্বটি (Continental Drift theory) তিনি ১৯১২ সালে জার্মান ভাষায় প্রথম উপস্থাপন করেন। 

  • ১৯২২ সালে জার্মান ভাষায় পরিমার্জিত রূপে ‘Dei Entstehung der Kontinente and Ozeane’  প্রকাশ করেন।

  • Dei Entstehung der Kontinente and Ozeane এর অর্থ মহাদেশ ও মহাসাগরের উৎপত্তি।

  • ১৯২৪ সালে ওয়েগনারের তত্ত্বটি ইংরেজী ভাষায় প্রকাশের পর বিজ্ঞানী সমাজে সারা ফেলে।  

  • প্রায় ৩৪ কোটি বছর আগে কার্বনিফরাস উপযুগে পৃথিবীতে একটিমাত্র মহাদেশ ছিল।

  • ওয়েগনার  তার মহীসঞ্চরণ মতবাদের যে বিশাল মহাদেশের কথা বলেন তার নাম রাখেন প্যানজিয়া।

  • প্যানজিয়া কথার অর্থ হল সুবিশাল মহাদেশ বা Super Continent.

  • প্যানজিয়া কে ঘিরে যে মহাসাগর ছিল তার নাম প্যান্থালেসা। 

  • প্রায় ২০ কোটি বছর আগে ট্রায়াসিক  উপযুগে  প্যানজিয়া তে ভাঙ্গন ধরে। 

  • ওয়েগনারের মতে অসমানুপাতিক মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ও জোয়ার এর  শক্তির দ্বারা প্যানজিয়া দুই ভাগে বিভক্ত হয়।

  • প্যানজিয়ার উত্তরভাগের নাম তিনি দেন লরেশিয়া বা আঙ্গারা ল্যান্ড।

  • প্যানজিয়ার দক্ষিণ ভাগের নাম তিনি দেন গান্ডোয়ানা ল্যান্ড।

  • প্যানজিয়া দুইভাগে বিভাক্ত হওয়ার ফলে এদের মাঝে যে অগভীর সমুদ্রে সৃষ্টি হয় তার নাম দেন টেথিস।

  • আজকের ভূমধ্যসাগর, কৃষ্ণসাগর এই টেথিস সাগরের অংশ বিশেষ।

  • প্রায় ১৩ কোটি  বছর আগে জুরাসিক উপযুগে গান্ডোয়ানা ল্যান্ড থেকে দক্ষিণ আমেরিকা,  আফ্রিকা,  উপদ্বীপীয় ভারত,  অস্ট্রেলিয়া ও এবং আন্টাকর্টিকা মহাদেশ আলাদা হয়ে যায়।

  • আফ্রিকা,  উপদ্বীপীয় ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় এদের মাঝে ভারত মহাসাগরের সৃষ্টি হয়। 

  • এখানে উপদ্বীপীয় ভারত বলতে দক্ষিণ ভারতের কঠিন শিলাযুক্ত অংশকে বোঝানো হয়েছে।

  • এই সময় লরেশিয়া বা আঙ্গারা ল্যান্ড থেকে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়া আলাদা হয়ে যায়।

  • প্রায় ৬ - ৭  কোটি বছর আগে ক্রিটেসিয়াস  উপযুগে  উত্তর আমেরিকা,  গ্রিনল্যান্ড ইউরোপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ফলে এদের মাঝে নরওয়েজিও সাগর সৃষ্টি হয়।

  • উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা যথাক্রমে ইউরোপ ও আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পশ্চিম দিকে সরে গেলে এদের মাঝে আটলান্টিক মহাসাগর ও পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ (West Indies) সৃষ্টি হয়।

  • এই সময় এশিয়া মহাদেশের পূর্ব দিকে বৃত্তচাপীয় দ্বীপমালার সৃষ্টি হয়  এবং প্যান্থালসার অবশিষ্ট অংশ প্রশান্ত মহাসাগর  সৃষ্টি করে। 

  • ১৯২৪ সালে স্যার আলফ্রেড ওয়েগনারের চলমান মহাদেশ তত্ত্বটি ইংরাজিতে প্রকাশের পর বিজ্ঞানী মহলে সমালোচনার সৃষ্টি হয় যার প্রধান বিষয় গুলি হল ঘটনাবলীর সময়কাল এবং তত্ত্বটিতে প্রযুক্ত শক্তি। 

  • কেন মহীসঞ্চরণ শুধুমাত্র কার্বোনিফেরাস যুগ থেকে ক্রিটেসিয়াস এর মধ্যেই  সময়ে সীমাবদ্ধ ছিল,  প্যেলিওজোয়িক  যুগের  আগে মহীসঞ্চরণ ঘটেনি তার ব্যাখ্যা ওয়েগনারের তত্ত্বে পাওয়া যায় না।

  • ওয়েগনার  তার তত্ত্বে যে শক্তির কথা বলেছেন তা মহাদেশগুলির সঞ্চরণে পর্যাপ্ত নয়।

  • সমালোচনা কাটাতে ওয়েগনার আরো কিছু সময় নেন এবং সমগ্র পৃথিবী ঘুরে তাঁর এই তত্ত্বটির স্বপক্ষে প্রমাণ জোগাড় করতে থাকেন।

  • উত্তর আমেরিকা মহাদেশের কার্পেন্থিয়ান পর্বত এবং ইউরোপ মহাদেশের জুরা পর্বতে একই প্রকার হার্সেনীয় ও আল্পীয় ভাঁজ দেখা যায় এর থেকে প্রমাণিত হয় উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ আগে একই ভূ-ভাগ ছিল।

  • পশ্চিম আফ্রিকার নিউগিনি উপকূল এবং ব্রাজিলের উচ্চভূমিতে একই প্রকার প্রাচীন নাইস জাতীয় আগ্নেয় শিলা দেখা যায় যা প্রমাণ করে দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা অতীতে একই ভূ-ভাগের অংশ ছিল।  

  • কানাডায় বরফের স্তুপ এর নিচে বালু এবং তার নিচে কয়লার অবস্থান প্রমাণ করে এই স্থানটি নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে উপক্রান্তিয় অঞ্চল এবং বর্তমানে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়েছে।

  • অস্ট্রেলিয়ায় জীবিত ক্যাঙ্গারু  এবং দক্ষিণ আমেরিকার চিলিতে পাওয়া ক্যাঙ্গারুর জীবাশ্ম প্রমাণ করে এই দুটি স্থান অতীতে যুক্ত ছিল।

  • পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে পাওয়া গ্লাসোপটেরিস নামক উদ্ভিদ ফার্ন জাতীয় উদ্ভিদের জীবাশ্ম প্রমাণ করে অতীতে মহাদেশ গুলি একত্রে ছিল।

  • দেবদারু গাছ শীতল জলবায়ুতে পাওয়া যায় কিন্তু তার  জীবাশ্ম কেমন করে রাজস্থানে পাওয়া যায় অথবা ইউরোপের শীতল জলবায়ুতে কেমন করে সুবিশাল কয়লার ভান্ডার সৃষ্টি হয়েছে তার ব্যাখ্যা মহাদেশগুলির সঞ্চরনের মাধ্যমে সম্ভব।

  • বর্তমানে মহাদেশ গুলির যে আকার দেখা যায় তা থেকে ধারণা করা যেতে পারে একটি মহাদেশের উপকূল এর আকৃতি অপর একটি মহাদেশের উপকূলের আকৃতির প্রায় সমান যেন এরা একটি ভাঙ্গা বস্তুর অংশ বিশেষ।

  • ওয়েগনার একে ভাঙ্গাবস্তুর জোর বা Gig Saw Fit নাম দেন।

  • বিখ্যাত জলবায়ুবীদ ভ্লাদিমির কোপেন  মনে করেন বর্তমানের মেরু অঞ্চল ও বিষুব অঞ্চল গুলির অবস্থান অতীতে আলাদা আলাদা স্থানে ছিল যা ওয়েগনারে তত্বকে সমর্থন করে।

  • পুরাতন শিলার চুম্বকত্বের নতি  অধ্যয়ন করে দেখা গেছে বিভিন্ন ভূ-তাত্ত্বিক যুগে পৃথিবীর মেরুর অবস্থান বিভিন্ন স্থানে ছিল যাকে মেরুভ্রমন  বা Polar wandering বলে।

  • ওয়েগনার মেরুর এই স্থান পরিবর্তনকে Pohlfluchlt নামে আখ্যা দেন।

  • বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক যুগের প্রাচীন বরফের সঞ্চয় দেখায় অতীতে মহাদেশ গুলি একত্রিত অবস্থায় ছিল। 

  • প্রসঙ্গত ওয়েগনারের চলমান মহাদেশীয় তত্ত্বটি আজও একটি বিতর্কের বিষয় তবে স্যার গ্রিফিট টেলর,  আর্থার হোমস্ মনে করেন এর মধ্যে কিছু বৈজ্ঞানিক সত্য লুকিয়ে রয়েছে।  


Share:

Climate Class XII Chapter 1.3 WBCHSE Semester III জলবায়ু দ্বাদশ শ্রেণী ভূগোল

Geography: Class XII         Climate (জলবায়ু)             Chapter 1.3

⚫কোন স্থানের নির্দিষ্ট সময়ে বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন উপাদান যেমন উষ্ণতা আদ্রতা অধঃক্ষেপণ বা বৃষ্টিপাত কিরকম থাকে তার সামগ্রিক অবস্থাকে বলা হয় ।
⚫আবহাওয়া আবহাওয়া পরিবর্তনশীল তাই প্রতি ঘন্টায় এবং প্রতিদিন আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে।
⚫আবহাওয়ার ৩০ থেকে ৪০ বছরের আবহাওয়ার গড় কে জলবায়ু বলে ।
⚫জলবায়ু পরিবর্তনশীল নয় ।
⚫কোন স্থানের জলবায়ু পরিবর্তন হতে দীর্ঘ সময় লাগে ।
⚫ভারতকে মৌসুমী জলবায়ুর দেশ বলা হয় ।
⚫পৃথিবীর অন্যান্য জলবায়ুগুলির মধ্যে নিরক্ষীয় জলবায়ু তুন্দ্রা জলবায়ু উষ্ণ মরু জলবায়ু শীতল নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু উল্লেখযোগ্য ।
⚫WMO হল বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ।
⚫কোন স্থানের জলবায়ু নির্ধারণ করতে ন্যূনতম ৩১ বছরের গড় আবহাওয়ার প্রয়োজন হয় ।
⚫বায়ুমন্ডলে উপস্থিত জলীয় বাষ্প কে বায়ুর আদ্রতা বলে ।
⚫এই জল প্রধানত তিনটি রূপে যথা কঠিন তরল এবং গ্যাসীয় রূপে থাকতে পারে ।
⚫বায়ুমন্ডলে জল কঠিন রূপে তুষার হিমায়িত বরফের কেলাস হিসাবে থাকতে পারে ।
⚫বায়ুমন্ডলে তরলরূপে জল সাধারণত ঘনীভবনের পর মেঘে সৃষ্ট জলকণা অপরদিকে শিশির কুয়াশা হিসাবে থাকে।
⚫বায়ুমন্ডলে জল গ্যাসীয় রূপে থাকে জলীয় বাষ্প হিসাবে ।
⚫পৃথিবীর মোট জলের মাত্র ০.০০১ শতাংশ জল বায়ুমণ্ডলে অবস্থান করে ।
⚫বায়ুর আদ্রতা নির্ণয় করার সময় শুষ্ক এবং আর্দ্র এই শব্দ দুটি ব্যবহার করা হয় ।
⚫সাধারণ কথায় আদ্র বায়ু বলতে স্যাঁত সাথে ভেজা বাতাসকে বোঝায় ।
⚫শুষ্ক বায়ু বলতে শুকনো বাতাসকে বোঝায় ।
⚫আদ্র বায়ুতে প্রায় চার শতাংশ জলীয়বাষ্প থাকতে পারে ।
⚫শুষ্ক বায়ুতে জলীয় বাষ্প থাকে না বললেই চলে।
⚫কোন উষ্ণতায় নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে যে পরিমাণ জলীয় বাষ্প থাকে তাকে বলা হয় ওই বায়ুর নিরপেক্ষ বা চরম আদ্রতা।
⚫উষ্ণতা অনুযায়ী কোন নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে অবস্থিত প্রকৃত জলীয় বাষ্পের পরিমাণের সঙ্গে যতখানি জলীয় বাষ্প যোগ করলে ওই বায়ু টিপ্ত হবে পরিপ্রৃপ্ত হবে তার অনুপাতকে আপেক্ষিক আদ্রতা বলে।
⚫আপেক্ষিক আদ্রতা শতকরা হিসাবে প্রকাশ করা হয় ।
⚫আপেক্ষিক আদ্রতা সর্বাধিক হয় – ভোর বেলায়।
⚫কোন বায়ুর নিরপেক্ষ আদ্রতা বৃদ্ধি পেলে তার আপেক্ষিক আদ্রতা বৃদ্ধি পায়।
⚫অপরদিকে বায়ুর নিরপেক্ষ আর্দ্রতা কমে গেলে তার আপেক্ষিক আর্দ্রতা কমে যায়।
⚫বায়ুর উষ্ণতা কম-বেশি হলে তার সঙ্গে আপেক্ষিক আদ্রতা বিপরীতভাবে পরিবর্তন ঘটে।
⚫বায়ুর উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণ কমে যায়
⚫অপরদিকে বায়ুর উষ্ণতা কমে গেলে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণ বেড়ে যায়।
⚫উচ্চতার সঙ্গে আপেক্ষিক আদ্রতার সম্পর্ক – ব্যস্তানুপাতিক।
⚫কোন বিশেষ বায়ুতে মোট আদ্র বায়ুর ভর এর সঙ্গে জলীয় বাষ্পের ভরের অনুপাতকে বিশেষ আদ্রতা বা আদ্রতার গুণাঙ্ক বলে।
⚫যে উষ্ণতায় আদ্র বায়ুর জলীয় বাষ্প জলকণায় পরিণত হয় সেই উষ্ণতাকে শিশিরাঙ্ক তাপমাত্রা বলে।
⚫আদ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্ক অতিক্রম করলে বায়ুর মধ্যস্থিত অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণায় পর্যবসিত হয় যাকে ঘনীভবন বলে।
⚫বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ যত বেশি হয় লীন তাপের পরিমাণও তত বেশি হয়।
⚫হাইগ্রোমিটার বা শুষ্ক ও আর্দ্র কুন্ড যন্ত্রের মাধ্যমে বায়ুর আদ্রতা পরিমাপ করা হয়।
⚫জলীয়বাষ্প সূর্যের তাপকে শোষণ করে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ করে।
⚫বায়ুমণ্ডলের যে গরম বা ঠান্ডা আমরা দেহের ত্বক দ্বারা অনুভব করি তাদের তাকে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য তাপমাত্রা বলে।
⚫বর্তমানে শিশিরাঙ্ক হাইগ্রোমিটার, হেয়ার হাইগ্রোমিটার। রেসিস্ট্যান্ট হাইড্রোমিটার, সাইক্রোমিটার প্রভৃতি আদ্রতা মাপক যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছ ।
⚫ঘনীভবন এর ফলে সৃষ্ট হওয়া বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত অতি সূক্ষ্ম জলকণা অথবা তুষার কণাপুঞ্জকে মেঘ বলে।
⚫১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ রসায়নবিদ লিউক হওয়ার্ড মেঘের শ্রেণীবিভাগ করেন।
⚫তার মতে উচ্চতার ভিত্তিতে মেঘ কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
⚫অধিক উচ্চতার মেঘ বোঝাতে সিরো বলা হয় যার উচ্চতা 6000 থেকে ১২ হাজার মিটার।
⚫মধ্যম উচ্চতার মেঘ বোঝাতে অল্টো বলা হয় যার উচ্চতা ২০০০ থেকে ৬ হাজার মিটার।
⚫এবং নিচু আকাশের মেঘ বোঝাতে স্ট্র্যটো বলা হয় যার উচ্চতা দুই হাজার মিটারের কম।
⚫পাশাপাশি বৃষ্টিপাত যুক্ত মেঘ বোঝাতে নিম্বো কথাটি ব্যবহার করা হয়।
⚫মেঘের প্রকৃতি এবং রং অনুসারে মেঘকে আবার ভাগ করা যায় যেমন- সিরাজ বা অলক মেঘ, কিউমুলাস বা স্তুপ মেঘ, স্ট্র্যাটাস বা স্তর মেঘ এবং নিম্বাস বা বর্ষণ মেঘ ।
⚫মেঘাচ্ছন্নতার পরিমাপ করা হয় – অক্টাস এ।
⚫Mother of Pearl Cloud – সিরাস মেঘকে বলা হয়।
⚫বর্ষাকালে বায়ুর গড় আপেক্ষিক আদ্রতা সবচেয়ে বেশি হয়।
⚫শীতকালে আকাশে দেখা যায় – সিরোকিউমুলাস মেঘ।
⚫অগ্নিশিখা পুষ্প বা পাখির পালকের মতো মেঘ – সিরাস মেঘকে বলা হয়।
⚫Sheep Cloud / Wool-Pack Cloud – অল্টো কিউমুলাস মেঘ।
⚫Bumpy Cloud – স্ট্রাটো কিউমুলাস।
⚫কিউমুলোনিম্বাস মেঘকে বড় মেঘ বলে।
⚫ফুলকপির মতো দেখতে মেঘ হল – কিউমুলাস মেঘ।
⚫পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে – নিগ্রোস্টাটাস মেঘে।
⚫যখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের কোন বস্তু ভূপৃষ্ঠে এসে পড়ে তাকে অধঃক্ষেপণ বা প্রিসিপিটেশন বলে।
⚫অধক্ষেপণ বলতে বৃষ্টিপাত তুষারপাত শিলা বৃষ্টি কুয়াশা শিশির তুহিন স্লিট মিস্ট গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি প্রভৃতিকে বোঝায়।
⚫আবহাওয়া বিজ্ঞানী বার্জেরন এবং ফিন্ডিসন তাদের হিমকেলাস তত্ত্ব বা আইস ক্রিস্টাল থিওরিতে বৃষ্টিপাতের সৃষ্টি ব্যাখ্যা করেছেন।
⚫অপরদিকে বৃষ্টিপাতের সৃষ্টির ব্যাখা হিসাবে সংঘর্ষ সম্মেলন তত্ত্বের জনক হলেন ই জি বোভেন।
⚫অধক্ষেপণ বলতে প্রধানত বৃষ্টিপাতকেই বোঝানো হয় কারণ 90% অধক্ষেপণ হল বৃষ্টিপাত।
⚫তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় যেমন পরিচলন বৃষ্টিপাত শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত এবং ঘূর্ণি বৃষ্টিপাত।
⚫ ‘4 O’clock Rain’ নিরক্ষীয় অক্ষাংশের পরিচলন বৃষ্টিপাত।
⚫পর্বতের যে ঢালে শৈরতক্ষেপ বৃষ্টিপাত হয় তাকে প্রতিবাত ঢাল বলে।
⚫অপরদিকে পর্বতের প্রতিবাত ঢালের বিপরীত দিকের ঢালকে বলে অনুবাত ঢাল।
⚫অনুবাদ ঢালে বৃষ্টিপাত হয় না বলে একে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে।
⚫শিলং ভারতের একটি বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলের উদাহরণ।
⚫অপরদিকে মেঘালয়ের মৌসিনরাম প্রতিবাত ঢালে অবস্থিত হওয়ায় বৃষ্টিপাত অধিক ঘটে।
⚫বৃষ্টিপাত পরিমাপক যন্ত্র – রেইনগজ।
⚫বায়ুর উষ্ণতা মাপক যন্ত্র – থার্মোমিটার।
⚫বায়ুর চাপ মাপার যন্ত্র – ব্যারোমিটার।
⚫বায়ুর দিক নির্ণয় যন্ত্রের নাম – বাত পতাকা।
⚫বায়ুর আদ্রতা পরিমাপক যন্ত্র – হাইগ্রোমিটার।
⚫বায়ুর গতিবেগ মাপার যন্ত্রের নাম – অ্যানিমোমিটার।
⚫বায়ুর শক্তি মাত্রা নির্ণয়কারী স্কেল – বিউফোর্ট স্কেল।
⚫বায়ুর গতিবেগ মাপার একক – নট (নটিকাল মাইল)।
⚫বাষ্পীভবনের হার পরিমাপক যন্ত্রের নাম – অ্যাটমোমিটার।
⚫আপেক্ষিক আদ্রতা পরিমাপক যন্ত্র – সাইক্ৰোমিটার।
⚫বাষ্পীভবন পরিমাপের যন্ত্র – ইভাপোরিমিটার।
⚫মেঘাচ্ছন্নতা পরিমাপক যন্ত্রের নাম – নেফেলোমিটার।
⚫মেঘের সংখ্যা ও গতি পর্যন্তেকার যন্ত্রের নাম – নেফোস্কোপ।
⚫মেঘের উচ্চতা নির্ণয়কারী যন্ত্র – সিলোমিটার।
⚫সমচাপ রেখা: বায়ুর সমান চাপ বিশিষ্ট স্থানগুলিকে যে কাল্পনিক রেখা দ্বারা যোগ করা হয়।
⚫সমোচ্চরেখা: পৃথিবীর সমান উচ্চতা যুক্ত স্থান যোগকারী কাল্পনিক রেখা।
⚫সমবর্ষণ রেখা: মানচিত্রে সমান বৃষ্টিপাত সংযোগকারী রেখা।
⚫সমরৌদ্রলোক রেখা: মানচিত্রে রৌদ্রলোক রেখা দ্বারা গড়ে বার্ষিক রৌদ্রকিরণ যুক্ত স্থানগুলিকে যোগ করা হয়।
⚫সমমেঘ রেখা: মানচিত্রে সমান মেঘের যুক্ত স্থান সংযোগকারী রেখা।





Share:

Biosphere Class XII Chapter 1.5 WBCHSE Semester III জীবমন্ডল দ্বাদশ শ্রেণী ভূগোল

 

Class XII               Biosphere (জীবমন্ডল)                   Chapter 1.5

 পৃথিবী ছাড়া আমাদের সৌরজগতের আর কোথাও জীব জীবনের কোনো অস্তিত্ব নেই।

পৃথিবীতে জীবনের শক্তির প্রধান উৎস হল সূর্য।

১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী জে টিভি তার বায়োগ্রাফি নামক বইয়ের জীবমন্ডলের সংজ্ঞা দেন।

পৃথিবীর শিলামন্ডল বাড়ি মন্ডল বায়ুমণ্ডল জুড়ে যেখানে জীবের বসবাস তাকে জীবমণ্ডল বলে।

জীব মন্ডল শুধু সজীব বস্তু যেমন উদ্ভিদ প্রাণী এবং নির্জীব বস্তু যেমন মাটি বায়ু জল নিয়ে গঠিত নয় এর সাথে শক্তির প্রবাহ যুক্ত রয়েছে। 

জীবমন্ডলের বিস্তৃতি মাটির গভীরে 10 মিটার সমুদ্রের গভীরে 100 মিটার এবং বায়ুমন্ডলে ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে 300 মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে বায়ুমন্ডলে ভূপৃষ্ঠ থেকে  ওপরের দিকে 15 কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। 

বৈশিষ্ট্য অনুসারে জীব মন্ডলকে দুইটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা স্থলভাগের জীবমন্ডল বা পাডো জীবমন্ডল  এবং জলভাগের জীব মণ্ডল বা হাইড্রো বায়োস্ফিয়ার। 

বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ প্রাণী এবং মানুষ নিয়ে স্থলভাগের জীবমন্ডল গঠিত হয়েছে।

অপরদিকে বিভিন্ন জলজ প্রাণী জলজ উদ্ভিদের সমন্বয়ে জলভাগের জীব মন্ডল গঠিত হয়েছে।

সুতরাং জীব মণ্ডলের প্রধান উপাদান গুলি হল বায়ুমণ্ডল বাড়ি মন্ডল এবং শিলা মন্ডল।

বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা ভূপৃষ্ঠ থেকে ঊর্ধ্বে তো প্রায় 10000 কিলোমিটার। 

বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন প্রাণীর শ্বসন কার্যে সাহায্য করে।

বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড উদ্ভিদের খাদ্য প্রস্তুতে সাহায্য করে।

বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন উদ্ভিদ প্রাণীর দেহের বিকাশে সহায্য করে। 

বারিমণ্ডল ছাড়া জলচক্র কল্পনা করা যায় না।

বাড়ি মন্ডল জলজ উদ্ভিদ জলজ প্রাণীর ধারক বাহক। 

বারিমন্ডল প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্যের উৎস। 

শিলামন্ডলের উপর স্থলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণী নির্ভর করে। 

পৃথিবীতে প্রায় 40 লক্ষ জীবের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা গেছে। 

জীবমন্ডলীয় প্রণালীর গঠনগত কার্যগত একক হল কোষ। 

জীবমন্ডলের গঠনগত রূপটি হল = জীবের প্রয়োজনীয় উপাদানের পরমাণু জৈব অজৈব অণু মাইক্রো অনু কোষীয় অঙ্গানু কোষ কলা অঙ্গ অঙ্গপ্রণালী জীব জীবমন্ডল।

প্রথম স্তর মনোমার শর্করা অ্যামাইনো অ্যাসিড নিউক্লিয়টাইড শৃঙ্খলিতভাবে বিন্যস্ত থাকে। 

দ্বিতীয় স্তর বনমমার গুলি সোলপিল আকারে বিন্যস্ত থাকে যেমন প্রোটিন প্রোটিন

তৃতীয় স্তর বিভিন্ন মনোমার শৃংখল পরস্পর একত্রিত হয়ে ত্রিমাত্রিক গঠন বিন্যাস করে। 

জীব যে পরিবেশে বাস করে সেই পরিবেশের সঙ্গে ওই  জীবকুলের যে মিথোক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাকে বাস্তবিদ্যা বা ইকোলজি বলে। 

বিজ্ঞানী আরনেস্ট হেকেল প্রথম ইকোলজি শব্দটি ব্যবহার করেন। 

অন্যদিকে বাস্তুতন্ত্র বা ইকোসিস্টেম শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন এজি ট্রান্সলেট। 

কয়েকজন জীববিজ্ঞানী হলেন হান্স রিটারএজি ট্রান্সলেআরনেস্ট হেকেল, লিন্ডেম্যান এবং  ওডাম  ইত্যাদি। 

বাস্তুতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল এটি একটি সুনির্দিষ্ট গঠনযুক্ত প্রণালী, এটি সর্বদাই ক্রিয়াশীল, এটি পুর্নাঙ্গ একটি জৈব বিষয়।

পৃথিবীর জল স্থল অন্তরীক্ষে অবস্থিত জীব সমূহ দিয়ে গঠিত পরিমন্ডলকে জীবমন্ডল বলে।

কোন বাস্তুরীতিতে কোন নির্দিষ্ট প্রজাতির সজিব পদার্থের যে ভর তাকে জীবভর বলে।

কোন একটি  নির্দিষ্ট বসতিতে পরস্পর সম্পর্ক যুক্ত উদ্ভিদ প্রানী গোষ্ঠীকে একত্রে জীব সম্প্রদার বলে।

বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে কোন নির্দিষ্ট জীবের নির্দষ্ট জীবের নির্দিষ্ট অবস্থান ভূমিকাকে বাস্তুতান্ত্রিক নিসে বলে।

কোন বাস্তুতন্ত্রের প্রতি একক সময়ে প্রতি একক আয়তনে যে হারে জৈব পদার্থ উৎপন্ন হয় তাকে উতপাদনশীলতা বলে। 

একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির জিন পুল পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন প্রজাতি সৃষ্টি করাকে পলিপ্লয়ডি বলে। 

কোন প্রজাতির প্রানী অথবা উদ্ভিদ এবং তার সমস্ত বংশধরকে একসঙ্গে ক্ল্যাড বলে।

বনভূমি, তৃণভূমি, মরুভূমি, তুন্দ্রএবং সাভানা হল প্রধান প্রধান স্থলজ

জলজ বাস্তুতন্ত্রকে দুইভাগে ভাগকরা যায়। যথা স্বাদুজলের বাস্তুতন্ত্র সামুদ্রিক জলের বাস্তুতন্ত্র।

জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভাগ গুলি হোল নদনদী, হ্রদ, পুকুর-ডোবা জলাভুমি

সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রকে প্রধানত অগভীর সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র গভীর সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

বাস্তুতন্ত্রের উপাদানগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা জড় বা অজীবজাত উপাদান এবং সজীব বা জীব জাত উপাদান।

জড় বা অজীবজাত উপাদান গুলি হল অজৈব পদার্থ, জৈব পদার্থ এবং ভৌত উপাদান।

অজৈব উপাদান গুলি হল ফসফরাস অক্সিজেন সালফার নাইট্রোজেন হাইড্রোজেন প্রভৃতি।

এই অজৈব উপাদান গুলি জীব  ভূ-রাসায়নিক চক্রের মাধ্যমে পরিবেশে নিজেদের ভারসাম্য পরিবেশে বজায় রাখে।

জৈব উপাদান গুলি হল কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন ফ্যাট ইত্যাদি।

এই জৈব উপাদান গুলি পরিবেশে উপস্থিত থেকে অজীবজাত উপাদানের মধ্যে সমন্বয়ে রাখে।

ভৌত উপাদান বলতে সূর্যালোক বায়ু প্রবাহ বৃষ্টিপাত তাপ ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপাদান গুলিকে বোঝায়।

বাস্তুতন্ত্রের জীবজাত উপাদান গুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা উৎপাদক, খাদক এবং বিয়োজক।

উৎপাদক বলতে সবুজ উদ্ভিদকে বোঝায় যা সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় নিজেদের মধ্যে খাদ্য হিসাবে সৌরশক্তিকে সঞ্চয় করে।

খাদক হল বাস্তু তন্ত্রের সেই সকল জীব যারা নিজেরা খাদ্য প্রস্তুত করতে পারে না এবং নিজেদের পুষ্টির জন্য উৎপাদকের উপর নির্ভরশীল।

খাদ্যাভ্যাসে ধরন অনুযায়ী খাদককে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন শাকাহারী মাংসাশী এবং সর্বভুক।

শাকাহারী বলতে প্রধানত তৃণভোজী প্রাণীদের বোঝায় যারা সবুজ উদ্ভিদ খেয়ে বেঁচে থাকে যেমন গরু-ছাগল মোষ ইত্যাদি।

মাংসাশী প্রাণী বলতে বাঘ সিংহ প্রতিটি প্রাণীকে বোঝায় যারা অন্য প্রাণীদের স্বীকার করে বেঁচে থাকে।

যে সকল প্রাণী প্রায় সবকিছুই চেয়ে থাকে তাদের বলে সর্বভুক যেমন মানুষ ময়ূর ইত্যাদি।

অপরদিকে খাদ্য খাদকের স্তর অনুসারে খাদককে আবার তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় যেমন প্রাথমিক খাদকগৌণ বা দ্বিতীয়  স্তরের খাদক এবং প্রগৌণ বা সর্বোচ্চ স্তরের খাদক।

যে সকল খাদকরা খাদ্যের জন্য সরাসরি সবুজ উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল তাদের প্রাথমিক খাদক বলে যেমন ছাগল গরু খরগোশ ইত্যাদি।

যে সকল প্রাণী খাদ্যের জন্য প্রাথমিক খাদকের উপর নির্ভরশীল তাদের গৌণ বা দ্বিতীয় স্তরের খাদক বলে যেমন কুকুর বিড়াল ব্যাঙ ইত্যাদি।

যে সকল খাদক খাদ্যের জন্য গৌণ খাদকের ওপর নির্ভরশীল তাদের প্রগৌণ খাদক বলে যেমন বাঘ সিংহ কুমির ময়ূর ইত্যাদি।

বাস্তুতন্ত্রে কিছু মৃতজীবী  উপাদান রয়েছে যেমন বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া যারা মৃত উদ্ভিদ প্রাণীর দেহাবশেষ কে বিয়োজিত করে পুনরায় তাদের  মাটিতে ফিরিয়ে দেয় এদের বিয়োজক বা ডিকম্পোজার বলে।

এই বিয়োজকরা মৃত উদ্ভিদ প্রাণীর দেহ থেকে যে পুষ্টি সঞ্চয় করে তাকে ডেট্রিটাস বলে।

সকল প্রাণী এই অর্ধ বিয়োজিত পদার্থকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে তাদের ডেট্রিভোর বলে যেমন কৃমি।

বিয়োজকরা মৃত উদ্ভিদ প্রাণীর দেহকে বিয়োজিত বা পচানোর সময় তাদের জটিল যৌগগুলিকে সরল যৌগে ভেঙে মাটিতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে খনিজকরন  বা মিনারালাইজেশন বলে।

ট্রাফিক লেভেল বা  পুষ্টি স্তর বলতে খাদ্যের যোগান সংক্রান্ত স্তরকে বোঝানো হয়েছে যেখানে একটি জীব অপর একটি জীবের থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে এবং শক্তি এক স্তর থেকে অন্য স্তরে স্থানান্তরিত হয়।

বিজ্ঞানী লিন্ডেম্যান (১৯৪২)বলেন এই খাদ্য গ্রহণের সময় প্রতিটি পুষ্টি স্তরে শক্তির যোগান দশ শতাংশ কমে যায়।

উৎপাদক স্তরে পুষ্টির পরিমাণ সব থেকে বেশি এবং প্রগৌণ খাদক স্তরে পুষ্টির পরিমাণ সব থেকে কম থাকে।

উৎপাদক সৌরশক্তিকে খাদ্য হিসেবে নিজের দেহে সঞ্চয় করে যা পরবর্তীতে গৌণ খাদক, প্রগৌণ খাদক এবং সর্বোচ্চ খাদকের মধ্যে একটি শৃংখল আকারে স্থানান্তরিত হয় যাকে খাদ্য শৃংখল বা  Food Chain বলে।

শৈবাল ( উৎপাদক) জলজ কীট ( প্রাথমিক খাদক) মাছ ( গৌণ খাদক) মানুষ ( প্রগৌণ খাদক)

খাদ্য শৃঙ্খল কে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা চারণ ভূমির খাদ্যশৃংখল কক্কর খাদ্য শৃংখল এবং মৃতজীবী খাদ্যশৃংখল।

যে খাদ্য শৃংখলে খাদ্য শক্তি উৎপাদক থেকে শাকাহারি এবং তারপর মাংসাশী প্রাণী তে স্থানান্তরিত হয় তাকে চারণ ভূমির খাদ্যশৃংখল বলে।

চারণভূমির খাদ্য শৃঙ্খলকে শিকারি খাদ্য শৃংখল পরজীবী খাদ্যশৃংখল এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

শিকারী খাদ্যশৃংখলঘাসফড়িং ব্যাং সাপ ময়ূর  

পরজীবী খাদ্য শৃংখলউদ্ভিদ মানুষ কৃমি। 

চারণভূমির খাদ্যশৃংখল স্থলভাগ জলভাগ উভয় স্থানে দেখা যায়।

স্থলভাগের খাদ্য শৃংখল উদ্ভিদ খরগোশ শেয়াল।

জলভাগের খাদ্য শৃংখল শৈবাল পতঙ্গ মাছ বক। 

যে খাদ্য শৃঙ্খলে পচনশীল বস্তু থেকে বিয়োজক হয়ে বৃহৎ মাংসাশী প্রানীতে শেষ হয় তাকে কক্কর খাদ্য শৃংখল বলে।

বিজ্ঞানী হিল্ড ওডাম  এই প্রকার খাদ্যশৃংখলের ব্যাখ্যা দিয়েছেন যেমন পচনশীল বস্তু ডেট্রিভোর ক্ষুদ্র গৌণ খাদক বৃহৎ প্রগৌন খাদক।

কক্কর খাদ্য শৃংখল ম্যানগ্রোভ  গাছের  পচা পাতা কোপিপড জাতীয় সন্ধিপদী মাছ বক।

মৃতজীবী খাদ্য শৃংখল মৃত গলা পচা জৈব বস্তু থেকে শুরু হয়ে ব্যাকটেরিয়াতে শেষ হয়।

মৃতজীবী খাদ্য শৃংখল  জৈব বস্তু কেঁচো ব্যাকটেরিয়া।

যখন অনেকগুলি খাদ্যশৃংখল পরস্পরের সাথে বিন্যাসযুক্ত হয় এবং আন্তসম্পর্ক গঠন করে তাকে খাদ্যজাল বলে।

বাস্তুতন্ত্রে একটি খাদ্যস্তর থেকে অপর খাদ্যস্তরে শক্তি স্থানান্তরিত হওয়ার সময় কিছু পরিমাণ শক্তি তাপশক্তি রূপে পরিবেশ ফিরে যাওয়ার জন্য পরবর্তী খাদ্যস্তরে মোট শক্তির পরিমাণ কমে যায়।

এই কারণে পরবর্তী খাদ্যস্তরে কম পরিমাণ শক্তির স্তানান্তরিত  হয়। 

অর্থাৎ এক স্তর থেকে পরবর্তী স্তরে পর্যায়ক্রমে জীবের সংখ্যা কমে যায়। কারণ বেশি সংখ্যক জীবকে পূর্ববর্তী খাদ্যস্তর শক্তির জোগান দিতে সক্ষম হয় না। 

নিম্ন খাদ্যস্তর থেকে উচ্চ খাদ্যস্তর পর্যন্ত জীবের সংখ্যা, ভর এবং স্থানান্তরিত শক্তিকে পরপর সাজালে যে শঙ্কু আকৃতির চিত্র পাওয়া যায় তাকে খাদ্য পিরামিড বলে।

বিজ্ঞানী জি. এলটন (G. Elton,1939) প্রথম এই খাদ্য পিরামিড এর ধারণা দেন।

তার মতে "বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক থেকে সর্বোচ্চ খাদক পর্যন্ত জীবের সংখ্যা, শক্তি এবং ওজন ক্রমশ কমতে থাকে।

এদের পরপর সাজালে যে চিত্র পাওয়া যায় তাকে খাদ্য পিরামিড বা বাস্তুতান্ত্রিক পিরামিড বলে"

বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই কারণে উৎপাদক পিরামিডের নিচে অর্থাৎ ভূমিতে অবস্থান করে।

খাদ্য পিরামিডে প্রাথমিক খাদকের স্থান উৎপাদকের ঠিক পরেই অর্থাৎ উপরে। 

প্রাথমিক খাদকের সংখ্যা উৎপাদকের তুলনায় কম হওয়ায় উপরে স্থান পেয়েছে।

গৌণ খাদক এবং প্রগৌণ খাদক প্রাথমিক খাদকের ঠিক উপরে অবস্থান করে কারণ এর সংখ্যা প্রাথমিক খাদক এর তুলনায় কম।

প্রগৌণ খাদক পিরামিডের শীর্ষে অবস্থান করে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অন্য কোন শীর্ষ খাদক পিরামিডের সর্বোচ্চ স্থান দখল করে থাকে।

খাদ্য পিরামিডের প্রতিটি স্তরেই বিয়োজোক অবস্থান করে।

খাদ্য পিরামিডকে তিনটি ভাগে বিভক্ত যথা জীব সংখ্যার পিরামিড, জীবভর বা বায়োমাসের পিরামিড এবং শক্তির পিরামিড।

কোন একটি বাস্তুতন্ত্রে প্রতিটি খাদ্যস্তরের প্রতি একক ক্ষেত্রফলে যত সংখ্যক জীব পাওয়া যায় তাদের পরপর সাজালে যে পিরামিড পাওয়া যায় তাকে জীব সংখ্যার পিরামিড বলে। 

এই পিরামিডের ভূমিতে অবস্থান করে উৎপাদক বা  সবুজ উদ্ভিদ, পরবর্তী খাদ্যস্তরে ( যেমন- প্রথম শ্রেণীর খাদক, দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদক, তৃতীয় শ্রেণীর খাদক) জীবের সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকে।

কোন একটি খাদ্যস্তরের জীবের সংখ্যার ওপর পরবর্তী খাদ্যস্তরের জীবের সংখ্যা নির্ভর করে।যেমনঃ- চারণভূমিতে বা তৃণভূমির বাস্তুতন্ত্রে তৃণ বা ঘাসের তুলনায় তৃণভোজী প্রাণীর সংখ্যা কম। 

তৃণভোজী প্রাণীদের যেহেতু মাংসাশী প্রানীরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে একারণে মাংসাশী প্রাণীর সংখ্যা তৃণভোজী প্রাণির সংখ্যার তুলনায় কম হয়। 

মাংসাশী প্রাণীদের ওপর যে সকল প্রাণী নির্ভরশীল অর্থাৎ মাংসাশী প্রাণীদের যে সকল প্রাণীরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে তাদের সংখ্যা মাংসাশী প্রাণীর তুলনায় কম হয়।

কোন বাস্তুতন্ত্রের নির্দিষ্ট খাদ্যস্তরে অবস্থিত জীবের শুষ্ক ওজনকে জীবভর বলা হয়, খাদ্য শৃঙ্খলের প্রতিটি স্তরের এই জীবভরকে পরপর সাজালে যে পিরামিড পাওয়া যায় তাকে জীবভরের পিরামিড বলে।

দেখা গেছে, কোন একটি খাদ্য শৃঙ্খলের একটি খাদ্যস্তরের 15 থেকে 20 শতাংশ জীবভর পরবর্তী খাদ্যস্তরে স্থানান্তরিত হয়। 

এই কারণে উৎপাদকের তুলনায় প্রথম শ্রেণীর খাদকের জীবভর কম হয় এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদকের  জীবভর প্রথম শ্রেণীর খাদকের তুলনায় কম হয়। 

যেমন- বনভূমির বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদকের জীবভর সর্বাপেক্ষা বেশি হয় এবং সর্বোচ্চ স্তরের খাদকের জীবভর সবচেয়ে কম হয়। 

বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক বা সবুজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় সৌরশক্তিকে নিজেদের মধ্যে আবদ্ধ রাখে। 

যে পরিমান শক্তিকে সবুজ উদ্ভিদ নিজেদের মধ্যে আবদ্ধ করে তার কিছু পরিমাণ তার শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া-কলাপের জন্য ব্যয় করে। 

কিছু অংশ পরবর্তী খাদ্যস্তরে স্থানান্তরিত হয়। অর্থাৎ উৎপাদকের দ্বারা আবদ্ধ মোট সৌরশক্তি পরবর্তী খাদ্যস্তরের স্থানান্তরিত হয় না। 

এই প্রকার খাদ্য পিরামিডে একটি খাদ্যস্তর থেকে পরবর্তী খাদ্যস্তরে শক্তির স্থানান্তর 80 থেকে 90 শতাংশ কমে যায়।

যদি প্রথম শ্রেণীর খাদক এর তুলনায় দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদকের সংখ্যা বেশি হয় এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদক এর তুলনায় তৃতীয় শ্রেণীর খাদকের সংখ্যা বেশি হয়এবং বিভিন্ন পুষ্টিস্তরের খাদকের সংখ্যাকে পরপর সাজালে স্বাভাবিক পিরামিডের বিপরীত আকার ধারণ করে তাকে বিপরীত পিরামিড বলে। 

বিপরীত খাদ্য পিরামিডের উদাহরন হল যেমন মানুষের পেটে পরজীবী রূপে বসবাসকারী কৃমির সংখ্যা বেশি হয়। তেমনই কৃমির মধ্যে অবস্থিত আদ্যপ্রাণীর সংখ্যা কৃমির তুলনায় বেশি হয়। 

এই প্রকার পিরামিডের ভূমিতে জীবের সংখ্যা কম এবং উপরিভাগে বেশি হয়। 

যে চক্রাকার পদ্ধতিতে জীবদেহ  গঠনকারী রাসায়নিক পুষ্টি মৌল গুলি পরিবেশ থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে পরিবেশে আবর্তিত হচ্ছে তাকে পুষ্টি চক্র বলে।

অক্সিজেন চক্রনাইট্রোজেন চক্র হলো প্রধান প্রধান পুষ্টি চক্রের উদাহরণ।

উদ্ভিদ প্রাণিজগত মাটি জলবায়ুর সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে যে বাস্তুতন্ত্র এর  একক গড়ে তোলে তাকে বায়োম বলে।

পাশাপাশি অবস্থিত দুটি প্রধান জীবগোষ্ঠীর মধ্যবর্তী পরিবর্তনশীল অঞ্চলকে ইকোটন বলে।

জলাভূমি তৃণভূমির মাঝের অঞ্চল হল ইকোটন যেখানে স্থলভাগ জলভাগ উভয়ের বাস্তুতন্ত্র দেখা যায়।

একটি নির্দিষ্ট বসতিতে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত সমস্ত উদ্ভিদ প্রাণী গোষ্ঠীকে একত্রে জীব গোষ্ঠী বা জীব সম্প্রদায় বলে। 

যে অনুকূল পরিবেশে এক বা একাধিক জীব প্রজাতি প্রাকৃতিক রাসায়নিক আপেক্ষিক অবস্থার মধ্যে সুষ্ঠুভাবে পারস্পরিক আদান-প্রদানের  ভিত্তিতে বেঁচে থাকে তাকে জীব প্রজাতির বাসভূমি বা হ্যাবিট্যাট  বলে।

স্থলভাগের জীবমন্ডল কে পেডোবায়োস্ফিয়ার বলে।

পৃথিবীর যে সকল অঞ্চল জি ফুলের বসবাসের অনুকূল সেগুলিকে ইউ বায়োস্ফিয়ার বলে।

পৃথিবীর যে সকল অঞ্চল জীব ফুলের বসবাসের উপযুক্ত নয় তাদের একত্রে প্যারা বায়োস্ফিয়ার বলে।

পরিবেশগত পার্থক্যের জন্য কোন নির্দিষ্ট প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে  যে গঠন গত চেহারা গত পার্থক্য ঘটে তাকে ইকোক্লাইন বলে।

বাস্তু তন্ত্রের যখন উদ্ভিদ প্রাণী সম্প্রদায়ের বিকাশ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় তাকে ক্লাইম্যাক্স কমিউনিটি বলে।

বাস্তু তন্ত্রের উদ্ভিদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিকাশ কে ক্লাইম্যাক্স ভিজিটেশন বলে।

প্রবাহমান জল যেমন নদীর জলের বাস্তুতন্ত্র কে লোটিক বাস্তু তন্ত্র বলে।

স্থির জলের বাস্তুতন্ত্র কে লেনটিক  বাস্তু তন্ত্র বলে যেমন পুকুর বা জলাশয়ের বাস্তুতন্ত্র।

খাদ্য শৃংখলের ধারাবাহিকতা অনুসারে বিভিন্ন শিল্পজাত বর্জ্য রাসায়নিক সার প্রভৃতি এক জীবদেহ থেকে অন্য জীবদেহে পরিবহনকে জৈবিক স্থানান্তর বলে।

এক জীবদেহ থেকে অন্য জীবদেহে পুষ্টি স্থানান্তরের সময় বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানের জীবদেহে জমা হওয়াকে জৈব কেন্দ্রীভবন বলে।

মানুষের থাইরয়েড গ্রন্থিতে আয়োডিনের জমা হওয়া জৈব কেন্দ্রীভবনের উদাহরণ।

একই প্রজাতির অন্তর্গত সমস্ত জীব কে একত্রে দ্বীপ সংখ্যা বা জনসংখ্যা বলে।

নির্দিষ্ট সময় অন্তর বাস্তুতন্ত্রে   জীব কূলের  আগমন নির্গমানের প্রক্রিয়া হল বাস্তুতান্ত্রিক ক্রমান্বয়। 

Share:

Popular Posts

Recent Posts

Total Pageviews