Biosphere Class XII Chapter 1.5 WBCHSE Semester III জীবমন্ডল দ্বাদশ শ্রেণী ভূগোল

 

Class XII               Biosphere (জীবমন্ডল)                   Chapter 1.5

 পৃথিবী ছাড়া আমাদের সৌরজগতের আর কোথাও জীব জীবনের কোনো অস্তিত্ব নেই।

পৃথিবীতে জীবনের শক্তির প্রধান উৎস হল সূর্য।

১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী জে টিভি তার বায়োগ্রাফি নামক বইয়ের জীবমন্ডলের সংজ্ঞা দেন।

পৃথিবীর শিলামন্ডল বাড়ি মন্ডল বায়ুমণ্ডল জুড়ে যেখানে জীবের বসবাস তাকে জীবমণ্ডল বলে।

জীব মন্ডল শুধু সজীব বস্তু যেমন উদ্ভিদ প্রাণী এবং নির্জীব বস্তু যেমন মাটি বায়ু জল নিয়ে গঠিত নয় এর সাথে শক্তির প্রবাহ যুক্ত রয়েছে। 

জীবমন্ডলের বিস্তৃতি মাটির গভীরে 10 মিটার সমুদ্রের গভীরে 100 মিটার এবং বায়ুমন্ডলে ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে 300 মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে বায়ুমন্ডলে ভূপৃষ্ঠ থেকে  ওপরের দিকে 15 কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। 

বৈশিষ্ট্য অনুসারে জীব মন্ডলকে দুইটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা স্থলভাগের জীবমন্ডল বা পাডো জীবমন্ডল  এবং জলভাগের জীব মণ্ডল বা হাইড্রো বায়োস্ফিয়ার। 

বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ প্রাণী এবং মানুষ নিয়ে স্থলভাগের জীবমন্ডল গঠিত হয়েছে।

অপরদিকে বিভিন্ন জলজ প্রাণী জলজ উদ্ভিদের সমন্বয়ে জলভাগের জীব মন্ডল গঠিত হয়েছে।

সুতরাং জীব মণ্ডলের প্রধান উপাদান গুলি হল বায়ুমণ্ডল বাড়ি মন্ডল এবং শিলা মন্ডল।

বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা ভূপৃষ্ঠ থেকে ঊর্ধ্বে তো প্রায় 10000 কিলোমিটার। 

বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন প্রাণীর শ্বসন কার্যে সাহায্য করে।

বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড উদ্ভিদের খাদ্য প্রস্তুতে সাহায্য করে।

বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন উদ্ভিদ প্রাণীর দেহের বিকাশে সহায্য করে। 

বারিমণ্ডল ছাড়া জলচক্র কল্পনা করা যায় না।

বাড়ি মন্ডল জলজ উদ্ভিদ জলজ প্রাণীর ধারক বাহক। 

বারিমন্ডল প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্যের উৎস। 

শিলামন্ডলের উপর স্থলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণী নির্ভর করে। 

পৃথিবীতে প্রায় 40 লক্ষ জীবের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা গেছে। 

জীবমন্ডলীয় প্রণালীর গঠনগত কার্যগত একক হল কোষ। 

জীবমন্ডলের গঠনগত রূপটি হল = জীবের প্রয়োজনীয় উপাদানের পরমাণু জৈব অজৈব অণু মাইক্রো অনু কোষীয় অঙ্গানু কোষ কলা অঙ্গ অঙ্গপ্রণালী জীব জীবমন্ডল।

প্রথম স্তর মনোমার শর্করা অ্যামাইনো অ্যাসিড নিউক্লিয়টাইড শৃঙ্খলিতভাবে বিন্যস্ত থাকে। 

দ্বিতীয় স্তর বনমমার গুলি সোলপিল আকারে বিন্যস্ত থাকে যেমন প্রোটিন প্রোটিন

তৃতীয় স্তর বিভিন্ন মনোমার শৃংখল পরস্পর একত্রিত হয়ে ত্রিমাত্রিক গঠন বিন্যাস করে। 

জীব যে পরিবেশে বাস করে সেই পরিবেশের সঙ্গে ওই  জীবকুলের যে মিথোক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাকে বাস্তবিদ্যা বা ইকোলজি বলে। 

বিজ্ঞানী আরনেস্ট হেকেল প্রথম ইকোলজি শব্দটি ব্যবহার করেন। 

অন্যদিকে বাস্তুতন্ত্র বা ইকোসিস্টেম শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন এজি ট্রান্সলেট। 

কয়েকজন জীববিজ্ঞানী হলেন হান্স রিটারএজি ট্রান্সলেআরনেস্ট হেকেল, লিন্ডেম্যান এবং  ওডাম  ইত্যাদি। 

বাস্তুতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল এটি একটি সুনির্দিষ্ট গঠনযুক্ত প্রণালী, এটি সর্বদাই ক্রিয়াশীল, এটি পুর্নাঙ্গ একটি জৈব বিষয়।

পৃথিবীর জল স্থল অন্তরীক্ষে অবস্থিত জীব সমূহ দিয়ে গঠিত পরিমন্ডলকে জীবমন্ডল বলে।

কোন বাস্তুরীতিতে কোন নির্দিষ্ট প্রজাতির সজিব পদার্থের যে ভর তাকে জীবভর বলে।

কোন একটি  নির্দিষ্ট বসতিতে পরস্পর সম্পর্ক যুক্ত উদ্ভিদ প্রানী গোষ্ঠীকে একত্রে জীব সম্প্রদার বলে।

বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে কোন নির্দিষ্ট জীবের নির্দষ্ট জীবের নির্দিষ্ট অবস্থান ভূমিকাকে বাস্তুতান্ত্রিক নিসে বলে।

কোন বাস্তুতন্ত্রের প্রতি একক সময়ে প্রতি একক আয়তনে যে হারে জৈব পদার্থ উৎপন্ন হয় তাকে উতপাদনশীলতা বলে। 

একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির জিন পুল পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন প্রজাতি সৃষ্টি করাকে পলিপ্লয়ডি বলে। 

কোন প্রজাতির প্রানী অথবা উদ্ভিদ এবং তার সমস্ত বংশধরকে একসঙ্গে ক্ল্যাড বলে।

বনভূমি, তৃণভূমি, মরুভূমি, তুন্দ্রএবং সাভানা হল প্রধান প্রধান স্থলজ

জলজ বাস্তুতন্ত্রকে দুইভাগে ভাগকরা যায়। যথা স্বাদুজলের বাস্তুতন্ত্র সামুদ্রিক জলের বাস্তুতন্ত্র।

জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভাগ গুলি হোল নদনদী, হ্রদ, পুকুর-ডোবা জলাভুমি

সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রকে প্রধানত অগভীর সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র গভীর সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

বাস্তুতন্ত্রের উপাদানগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা জড় বা অজীবজাত উপাদান এবং সজীব বা জীব জাত উপাদান।

জড় বা অজীবজাত উপাদান গুলি হল অজৈব পদার্থ, জৈব পদার্থ এবং ভৌত উপাদান।

অজৈব উপাদান গুলি হল ফসফরাস অক্সিজেন সালফার নাইট্রোজেন হাইড্রোজেন প্রভৃতি।

এই অজৈব উপাদান গুলি জীব  ভূ-রাসায়নিক চক্রের মাধ্যমে পরিবেশে নিজেদের ভারসাম্য পরিবেশে বজায় রাখে।

জৈব উপাদান গুলি হল কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন ফ্যাট ইত্যাদি।

এই জৈব উপাদান গুলি পরিবেশে উপস্থিত থেকে অজীবজাত উপাদানের মধ্যে সমন্বয়ে রাখে।

ভৌত উপাদান বলতে সূর্যালোক বায়ু প্রবাহ বৃষ্টিপাত তাপ ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপাদান গুলিকে বোঝায়।

বাস্তুতন্ত্রের জীবজাত উপাদান গুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা উৎপাদক, খাদক এবং বিয়োজক।

উৎপাদক বলতে সবুজ উদ্ভিদকে বোঝায় যা সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় নিজেদের মধ্যে খাদ্য হিসাবে সৌরশক্তিকে সঞ্চয় করে।

খাদক হল বাস্তু তন্ত্রের সেই সকল জীব যারা নিজেরা খাদ্য প্রস্তুত করতে পারে না এবং নিজেদের পুষ্টির জন্য উৎপাদকের উপর নির্ভরশীল।

খাদ্যাভ্যাসে ধরন অনুযায়ী খাদককে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন শাকাহারী মাংসাশী এবং সর্বভুক।

শাকাহারী বলতে প্রধানত তৃণভোজী প্রাণীদের বোঝায় যারা সবুজ উদ্ভিদ খেয়ে বেঁচে থাকে যেমন গরু-ছাগল মোষ ইত্যাদি।

মাংসাশী প্রাণী বলতে বাঘ সিংহ প্রতিটি প্রাণীকে বোঝায় যারা অন্য প্রাণীদের স্বীকার করে বেঁচে থাকে।

যে সকল প্রাণী প্রায় সবকিছুই চেয়ে থাকে তাদের বলে সর্বভুক যেমন মানুষ ময়ূর ইত্যাদি।

অপরদিকে খাদ্য খাদকের স্তর অনুসারে খাদককে আবার তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় যেমন প্রাথমিক খাদকগৌণ বা দ্বিতীয়  স্তরের খাদক এবং প্রগৌণ বা সর্বোচ্চ স্তরের খাদক।

যে সকল খাদকরা খাদ্যের জন্য সরাসরি সবুজ উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল তাদের প্রাথমিক খাদক বলে যেমন ছাগল গরু খরগোশ ইত্যাদি।

যে সকল প্রাণী খাদ্যের জন্য প্রাথমিক খাদকের উপর নির্ভরশীল তাদের গৌণ বা দ্বিতীয় স্তরের খাদক বলে যেমন কুকুর বিড়াল ব্যাঙ ইত্যাদি।

যে সকল খাদক খাদ্যের জন্য গৌণ খাদকের ওপর নির্ভরশীল তাদের প্রগৌণ খাদক বলে যেমন বাঘ সিংহ কুমির ময়ূর ইত্যাদি।

বাস্তুতন্ত্রে কিছু মৃতজীবী  উপাদান রয়েছে যেমন বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া যারা মৃত উদ্ভিদ প্রাণীর দেহাবশেষ কে বিয়োজিত করে পুনরায় তাদের  মাটিতে ফিরিয়ে দেয় এদের বিয়োজক বা ডিকম্পোজার বলে।

এই বিয়োজকরা মৃত উদ্ভিদ প্রাণীর দেহ থেকে যে পুষ্টি সঞ্চয় করে তাকে ডেট্রিটাস বলে।

সকল প্রাণী এই অর্ধ বিয়োজিত পদার্থকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে তাদের ডেট্রিভোর বলে যেমন কৃমি।

বিয়োজকরা মৃত উদ্ভিদ প্রাণীর দেহকে বিয়োজিত বা পচানোর সময় তাদের জটিল যৌগগুলিকে সরল যৌগে ভেঙে মাটিতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে খনিজকরন  বা মিনারালাইজেশন বলে।

ট্রাফিক লেভেল বা  পুষ্টি স্তর বলতে খাদ্যের যোগান সংক্রান্ত স্তরকে বোঝানো হয়েছে যেখানে একটি জীব অপর একটি জীবের থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে এবং শক্তি এক স্তর থেকে অন্য স্তরে স্থানান্তরিত হয়।

বিজ্ঞানী লিন্ডেম্যান (১৯৪২)বলেন এই খাদ্য গ্রহণের সময় প্রতিটি পুষ্টি স্তরে শক্তির যোগান দশ শতাংশ কমে যায়।

উৎপাদক স্তরে পুষ্টির পরিমাণ সব থেকে বেশি এবং প্রগৌণ খাদক স্তরে পুষ্টির পরিমাণ সব থেকে কম থাকে।

উৎপাদক সৌরশক্তিকে খাদ্য হিসেবে নিজের দেহে সঞ্চয় করে যা পরবর্তীতে গৌণ খাদক, প্রগৌণ খাদক এবং সর্বোচ্চ খাদকের মধ্যে একটি শৃংখল আকারে স্থানান্তরিত হয় যাকে খাদ্য শৃংখল বা  Food Chain বলে।

শৈবাল ( উৎপাদক) জলজ কীট ( প্রাথমিক খাদক) মাছ ( গৌণ খাদক) মানুষ ( প্রগৌণ খাদক)

খাদ্য শৃঙ্খল কে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা চারণ ভূমির খাদ্যশৃংখল কক্কর খাদ্য শৃংখল এবং মৃতজীবী খাদ্যশৃংখল।

যে খাদ্য শৃংখলে খাদ্য শক্তি উৎপাদক থেকে শাকাহারি এবং তারপর মাংসাশী প্রাণী তে স্থানান্তরিত হয় তাকে চারণ ভূমির খাদ্যশৃংখল বলে।

চারণভূমির খাদ্য শৃঙ্খলকে শিকারি খাদ্য শৃংখল পরজীবী খাদ্যশৃংখল এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

শিকারী খাদ্যশৃংখলঘাসফড়িং ব্যাং সাপ ময়ূর  

পরজীবী খাদ্য শৃংখলউদ্ভিদ মানুষ কৃমি। 

চারণভূমির খাদ্যশৃংখল স্থলভাগ জলভাগ উভয় স্থানে দেখা যায়।

স্থলভাগের খাদ্য শৃংখল উদ্ভিদ খরগোশ শেয়াল।

জলভাগের খাদ্য শৃংখল শৈবাল পতঙ্গ মাছ বক। 

যে খাদ্য শৃঙ্খলে পচনশীল বস্তু থেকে বিয়োজক হয়ে বৃহৎ মাংসাশী প্রানীতে শেষ হয় তাকে কক্কর খাদ্য শৃংখল বলে।

বিজ্ঞানী হিল্ড ওডাম  এই প্রকার খাদ্যশৃংখলের ব্যাখ্যা দিয়েছেন যেমন পচনশীল বস্তু ডেট্রিভোর ক্ষুদ্র গৌণ খাদক বৃহৎ প্রগৌন খাদক।

কক্কর খাদ্য শৃংখল ম্যানগ্রোভ  গাছের  পচা পাতা কোপিপড জাতীয় সন্ধিপদী মাছ বক।

মৃতজীবী খাদ্য শৃংখল মৃত গলা পচা জৈব বস্তু থেকে শুরু হয়ে ব্যাকটেরিয়াতে শেষ হয়।

মৃতজীবী খাদ্য শৃংখল  জৈব বস্তু কেঁচো ব্যাকটেরিয়া।

যখন অনেকগুলি খাদ্যশৃংখল পরস্পরের সাথে বিন্যাসযুক্ত হয় এবং আন্তসম্পর্ক গঠন করে তাকে খাদ্যজাল বলে।

বাস্তুতন্ত্রে একটি খাদ্যস্তর থেকে অপর খাদ্যস্তরে শক্তি স্থানান্তরিত হওয়ার সময় কিছু পরিমাণ শক্তি তাপশক্তি রূপে পরিবেশ ফিরে যাওয়ার জন্য পরবর্তী খাদ্যস্তরে মোট শক্তির পরিমাণ কমে যায়।

এই কারণে পরবর্তী খাদ্যস্তরে কম পরিমাণ শক্তির স্তানান্তরিত  হয়। 

অর্থাৎ এক স্তর থেকে পরবর্তী স্তরে পর্যায়ক্রমে জীবের সংখ্যা কমে যায়। কারণ বেশি সংখ্যক জীবকে পূর্ববর্তী খাদ্যস্তর শক্তির জোগান দিতে সক্ষম হয় না। 

নিম্ন খাদ্যস্তর থেকে উচ্চ খাদ্যস্তর পর্যন্ত জীবের সংখ্যা, ভর এবং স্থানান্তরিত শক্তিকে পরপর সাজালে যে শঙ্কু আকৃতির চিত্র পাওয়া যায় তাকে খাদ্য পিরামিড বলে।

বিজ্ঞানী জি. এলটন (G. Elton,1939) প্রথম এই খাদ্য পিরামিড এর ধারণা দেন।

তার মতে "বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক থেকে সর্বোচ্চ খাদক পর্যন্ত জীবের সংখ্যা, শক্তি এবং ওজন ক্রমশ কমতে থাকে।

এদের পরপর সাজালে যে চিত্র পাওয়া যায় তাকে খাদ্য পিরামিড বা বাস্তুতান্ত্রিক পিরামিড বলে"

বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই কারণে উৎপাদক পিরামিডের নিচে অর্থাৎ ভূমিতে অবস্থান করে।

খাদ্য পিরামিডে প্রাথমিক খাদকের স্থান উৎপাদকের ঠিক পরেই অর্থাৎ উপরে। 

প্রাথমিক খাদকের সংখ্যা উৎপাদকের তুলনায় কম হওয়ায় উপরে স্থান পেয়েছে।

গৌণ খাদক এবং প্রগৌণ খাদক প্রাথমিক খাদকের ঠিক উপরে অবস্থান করে কারণ এর সংখ্যা প্রাথমিক খাদক এর তুলনায় কম।

প্রগৌণ খাদক পিরামিডের শীর্ষে অবস্থান করে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অন্য কোন শীর্ষ খাদক পিরামিডের সর্বোচ্চ স্থান দখল করে থাকে।

খাদ্য পিরামিডের প্রতিটি স্তরেই বিয়োজোক অবস্থান করে।

খাদ্য পিরামিডকে তিনটি ভাগে বিভক্ত যথা জীব সংখ্যার পিরামিড, জীবভর বা বায়োমাসের পিরামিড এবং শক্তির পিরামিড।

কোন একটি বাস্তুতন্ত্রে প্রতিটি খাদ্যস্তরের প্রতি একক ক্ষেত্রফলে যত সংখ্যক জীব পাওয়া যায় তাদের পরপর সাজালে যে পিরামিড পাওয়া যায় তাকে জীব সংখ্যার পিরামিড বলে। 

এই পিরামিডের ভূমিতে অবস্থান করে উৎপাদক বা  সবুজ উদ্ভিদ, পরবর্তী খাদ্যস্তরে ( যেমন- প্রথম শ্রেণীর খাদক, দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদক, তৃতীয় শ্রেণীর খাদক) জীবের সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকে।

কোন একটি খাদ্যস্তরের জীবের সংখ্যার ওপর পরবর্তী খাদ্যস্তরের জীবের সংখ্যা নির্ভর করে।যেমনঃ- চারণভূমিতে বা তৃণভূমির বাস্তুতন্ত্রে তৃণ বা ঘাসের তুলনায় তৃণভোজী প্রাণীর সংখ্যা কম। 

তৃণভোজী প্রাণীদের যেহেতু মাংসাশী প্রানীরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে একারণে মাংসাশী প্রাণীর সংখ্যা তৃণভোজী প্রাণির সংখ্যার তুলনায় কম হয়। 

মাংসাশী প্রাণীদের ওপর যে সকল প্রাণী নির্ভরশীল অর্থাৎ মাংসাশী প্রাণীদের যে সকল প্রাণীরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে তাদের সংখ্যা মাংসাশী প্রাণীর তুলনায় কম হয়।

কোন বাস্তুতন্ত্রের নির্দিষ্ট খাদ্যস্তরে অবস্থিত জীবের শুষ্ক ওজনকে জীবভর বলা হয়, খাদ্য শৃঙ্খলের প্রতিটি স্তরের এই জীবভরকে পরপর সাজালে যে পিরামিড পাওয়া যায় তাকে জীবভরের পিরামিড বলে।

দেখা গেছে, কোন একটি খাদ্য শৃঙ্খলের একটি খাদ্যস্তরের 15 থেকে 20 শতাংশ জীবভর পরবর্তী খাদ্যস্তরে স্থানান্তরিত হয়। 

এই কারণে উৎপাদকের তুলনায় প্রথম শ্রেণীর খাদকের জীবভর কম হয় এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদকের  জীবভর প্রথম শ্রেণীর খাদকের তুলনায় কম হয়। 

যেমন- বনভূমির বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদকের জীবভর সর্বাপেক্ষা বেশি হয় এবং সর্বোচ্চ স্তরের খাদকের জীবভর সবচেয়ে কম হয়। 

বাস্তুতন্ত্রে উৎপাদক বা সবুজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় সৌরশক্তিকে নিজেদের মধ্যে আবদ্ধ রাখে। 

যে পরিমান শক্তিকে সবুজ উদ্ভিদ নিজেদের মধ্যে আবদ্ধ করে তার কিছু পরিমাণ তার শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া-কলাপের জন্য ব্যয় করে। 

কিছু অংশ পরবর্তী খাদ্যস্তরে স্থানান্তরিত হয়। অর্থাৎ উৎপাদকের দ্বারা আবদ্ধ মোট সৌরশক্তি পরবর্তী খাদ্যস্তরের স্থানান্তরিত হয় না। 

এই প্রকার খাদ্য পিরামিডে একটি খাদ্যস্তর থেকে পরবর্তী খাদ্যস্তরে শক্তির স্থানান্তর 80 থেকে 90 শতাংশ কমে যায়।

যদি প্রথম শ্রেণীর খাদক এর তুলনায় দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদকের সংখ্যা বেশি হয় এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর খাদক এর তুলনায় তৃতীয় শ্রেণীর খাদকের সংখ্যা বেশি হয়এবং বিভিন্ন পুষ্টিস্তরের খাদকের সংখ্যাকে পরপর সাজালে স্বাভাবিক পিরামিডের বিপরীত আকার ধারণ করে তাকে বিপরীত পিরামিড বলে। 

বিপরীত খাদ্য পিরামিডের উদাহরন হল যেমন মানুষের পেটে পরজীবী রূপে বসবাসকারী কৃমির সংখ্যা বেশি হয়। তেমনই কৃমির মধ্যে অবস্থিত আদ্যপ্রাণীর সংখ্যা কৃমির তুলনায় বেশি হয়। 

এই প্রকার পিরামিডের ভূমিতে জীবের সংখ্যা কম এবং উপরিভাগে বেশি হয়। 

যে চক্রাকার পদ্ধতিতে জীবদেহ  গঠনকারী রাসায়নিক পুষ্টি মৌল গুলি পরিবেশ থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে পরিবেশে আবর্তিত হচ্ছে তাকে পুষ্টি চক্র বলে।

অক্সিজেন চক্রনাইট্রোজেন চক্র হলো প্রধান প্রধান পুষ্টি চক্রের উদাহরণ।

উদ্ভিদ প্রাণিজগত মাটি জলবায়ুর সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে যে বাস্তুতন্ত্র এর  একক গড়ে তোলে তাকে বায়োম বলে।

পাশাপাশি অবস্থিত দুটি প্রধান জীবগোষ্ঠীর মধ্যবর্তী পরিবর্তনশীল অঞ্চলকে ইকোটন বলে।

জলাভূমি তৃণভূমির মাঝের অঞ্চল হল ইকোটন যেখানে স্থলভাগ জলভাগ উভয়ের বাস্তুতন্ত্র দেখা যায়।

একটি নির্দিষ্ট বসতিতে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত সমস্ত উদ্ভিদ প্রাণী গোষ্ঠীকে একত্রে জীব গোষ্ঠী বা জীব সম্প্রদায় বলে। 

যে অনুকূল পরিবেশে এক বা একাধিক জীব প্রজাতি প্রাকৃতিক রাসায়নিক আপেক্ষিক অবস্থার মধ্যে সুষ্ঠুভাবে পারস্পরিক আদান-প্রদানের  ভিত্তিতে বেঁচে থাকে তাকে জীব প্রজাতির বাসভূমি বা হ্যাবিট্যাট  বলে।

স্থলভাগের জীবমন্ডল কে পেডোবায়োস্ফিয়ার বলে।

পৃথিবীর যে সকল অঞ্চল জি ফুলের বসবাসের অনুকূল সেগুলিকে ইউ বায়োস্ফিয়ার বলে।

পৃথিবীর যে সকল অঞ্চল জীব ফুলের বসবাসের উপযুক্ত নয় তাদের একত্রে প্যারা বায়োস্ফিয়ার বলে।

পরিবেশগত পার্থক্যের জন্য কোন নির্দিষ্ট প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে  যে গঠন গত চেহারা গত পার্থক্য ঘটে তাকে ইকোক্লাইন বলে।

বাস্তু তন্ত্রের যখন উদ্ভিদ প্রাণী সম্প্রদায়ের বিকাশ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় তাকে ক্লাইম্যাক্স কমিউনিটি বলে।

বাস্তু তন্ত্রের উদ্ভিদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিকাশ কে ক্লাইম্যাক্স ভিজিটেশন বলে।

প্রবাহমান জল যেমন নদীর জলের বাস্তুতন্ত্র কে লোটিক বাস্তু তন্ত্র বলে।

স্থির জলের বাস্তুতন্ত্র কে লেনটিক  বাস্তু তন্ত্র বলে যেমন পুকুর বা জলাশয়ের বাস্তুতন্ত্র।

খাদ্য শৃংখলের ধারাবাহিকতা অনুসারে বিভিন্ন শিল্পজাত বর্জ্য রাসায়নিক সার প্রভৃতি এক জীবদেহ থেকে অন্য জীবদেহে পরিবহনকে জৈবিক স্থানান্তর বলে।

এক জীবদেহ থেকে অন্য জীবদেহে পুষ্টি স্থানান্তরের সময় বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানের জীবদেহে জমা হওয়াকে জৈব কেন্দ্রীভবন বলে।

মানুষের থাইরয়েড গ্রন্থিতে আয়োডিনের জমা হওয়া জৈব কেন্দ্রীভবনের উদাহরণ।

একই প্রজাতির অন্তর্গত সমস্ত জীব কে একত্রে দ্বীপ সংখ্যা বা জনসংখ্যা বলে।

নির্দিষ্ট সময় অন্তর বাস্তুতন্ত্রে   জীব কূলের  আগমন নির্গমানের প্রক্রিয়া হল বাস্তুতান্ত্রিক ক্রমান্বয়। 

Share:

No comments:

Post a Comment

Popular Posts

Recent Posts

Total Pageviews